ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিপ্লব দেব। রাজ্যপালের কাছে শনিবার পদত্যাগ পত্র পেশ করেছেন তিনি। শুক্রবার দিল্লিতে ছিলেন বিল্পববাবু। শনিবার আগরতলায় ফিরেই রাজ্যপালের কাছে ইস্তফাপত্র দিয়েছেন।
ইস্তফা দেওয়ার পর বিপ্সৃলব দেব বলেছেন যে, আশা করব আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি সেটা পালন করতে পেরেছি। ত্রিপুরার মানুষের প্রতি ন্যায় করেছি। আমি এবার দলের হয়ে কাজ করব। আগামী বছর রাজ্যে ভোট রয়েছে। সংগঠন আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাই আমিও দলের হয়ে কাজ করব। সংগঠন থাকলে, জিত থাকলে তবেই তো মুখ্যমন্ত্রী পদের বিবেচনা। আগে সরকার আনতে হবে। লম্বা সময় সরকার রাখতে হলে আমি মনে করি আমার মতো কার্যকর্তা থাকলে দলের সুবিধা হবে।'
তবে, কেন এই ইস্তফা তা নিয়ে এখনও কিছু খোলসা করেন বিজেপি বা বিপ্লব দেব। ত্রিপুরার বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন, 'আমাদের দল বিভিন্ন সময় ভিন্ন পদাধিকারীদের নানা পদের দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। বিল্পব দেবকে নিষ্চই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আরও বড় ভূমিকায় দেখতে চান। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। তবে, বিপ্লববাবুর বিজেপির উপর, এবং দলের ওনার উপর সম্পূ্ণ আস্থা রয়েছে।'
বিজেপি সূত্রে খবর, আজ বিকাল ৫টায় শাসক দলের বিধায়করা বৈঠক করবেন এবং সেখান থেকেই নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন হবে। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে দলের সাংগঠনিক কাজে ব্যবহার করা হবে বলে গেরুয়া শিবির জানাচ্ছে। ত্রিপুরা বিজেপির একটি অংশের মতে, ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট। তার আগে বিপ্লব দেবকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
২০১৮ সালে ত্রিপুরায় প্রথমবারের জন্য ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী করা হয় বিপ্লব দেবকে। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছরের বেশি সময় আগেই পদত্যাগ করলেন তিনি। কেন এই ইস্তফা? তা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
সূত্রের খবর, গত চার বছরের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের নানা মন্তব্য ও সিদ্ধান্তে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। গেরুয়া বাহিনীর অন্দরেরই তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী তৈরি হয়। নানা সময় বিরোধী গোষ্ঠী মুখ্যমন্ত্রী বিরুদ্ধে দিলব্লির নেতাদের কান ভারি করতেন। এই অবস্থায় নিজের জনপ্রিয়তা তুলে ধরতে একসময় গণভোঠের দাবি তুলেছিলেন বিপ্লব দেব। যদিও শাহী নির্দেশে সেই দাবি থেকে পরে সরে আসেন তিনি। সবমিলিয়ে ভোটের এক বছর আগে গোষ্ঠী কোন্দলে দীর্ণ ত্রিপুরার বিজেপি। চড়ছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধী সুর। ফলে বিপ্লবকে সরিয়েই আপাতত ক্ষতে মলম দেওয়ার দাওয়াই দিল শাহ-নাড্ডা জুটি। সর্বগ্রহণযোগ্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে মরিয়া বিজেপি।
বিপ্লব দেবের পদত্যাগ নিয়ে তৃণমূের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'বিজেপি একজন মুখ্যমন্ত্রী দিয়ে পাঁচ বছর রাজ্য চালাতে পারছে না। ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বদল আসছে এটা তারই ইঙ্গিত। আসলে মানুষের সঙ্গে নেই ওরা, শুধু মুখেই বড় কথা। পরের ভোটে ত্রিপুরার ভোটে জিতে সুশাসন উপহার দেবে তৃণমূল।'
বিপ্লবের পরে কে হবেন ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? জল্পনা চরমে। জানা গিয়েছে দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা।
Read in English