বছর ঘুরলেই উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সাম্প্রতিক কালে কেরল, বাংলা, অসম, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে ভোট হয়েছিল। পুদুচেরি ও অসম-সহ বাকি তিন রাজ্যে ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশ তাই সেমিফাইনাল গেরুয়া শিবিরের কাছে। অন্যদিকে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার কংগ্রেসের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ পাঞ্জাবে ক্ষমতায় ফেরা।
পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগে কী বলছে এবিপি-সি ভোটারের জনমত সমীক্ষা আসুন দেখে নেওয়া যাক-
পাঞ্জাব- যেমনটা আগে বলা হল। পাঞ্জাবে এখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই বড় মাথাব্যথা শাসকদল কংগ্রেসের। ক্যাপ্টেন আর সিধু শিবিরের কোন্দলে সরকার টালমাটাল। এই অবস্থায় সি ভোটারের সমীক্ষা বলছে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি উত্তরের রাজ্যে শেষ হাসি হাসতে পারে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কংগ্রেসের বিকল্প হিসাবে নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে আপ। পাঞ্জাবেও কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দলে ফায়দা ঘরে তুলতে পারে আপ।
সমীক্ষা বলছে, কংগ্রেসের ভোট কমতে পারে ১০ শতাংশ। ২০১৭ সালের ৩৮.৫ থেকে ২৮.৮ শতাংশে নামতে পারে ভোট। আর আপের ভোট শতাংশ ২৩.৭ থেকে বেড়ে হতে পারে ৩৫.১ শতাংশ। সমীক্ষা বলছে, ১১৭ আসনের পাঞ্জাব বিধানসভায় ৫১-৫৭ আসন পেতে পারে আপ। কংগ্রেস নেমে যেতে পারে ৩৮-৪৬টি আসনে। আরেক বিরোধী দল শিরোমণি অকালি দল পেতে পারে ১৬-২৪টি আসন এবং তাঁর পুরনো সঙ্গী বিজেপি খাতা নাও খুলতে পারে। রাজ্যের ২১.৬ শতাংশ মানুষ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে চাইছেন। ক্যাপ্টেনকে চাইছেন ১৭.৯ শতাংশ মানুষ।
আরও পড়ুন শুধু ভবানীপুরেই উপনির্বাচন ৩০ সেপ্টেম্বর, ওই দিনই ভোট বাংলার ২ কেন্দ্রে
উত্তরাখণ্ড- যতই চার মাসে তিনবার মুখ্যমন্ত্রী বদলাক, জনমত সমীক্ষা বলছে, মানুষ বিজেপিকেই ফের ক্ষমতায় চাইছে। ৭০ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় ৪৪-৪৮টি আসন পেয়ে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে পদ্মশিবির। কংগ্রেস ১৯-২৩টি আসন পেয়ে বিরোধীই থাকতে চলেছে। আম আদমি পার্টি অনেক জনমুখী প্রতিশ্রুতি দিলেও হিন্দু অধ্যুষিত দেবভূমিতে ২টির বেশি আসন পাচ্ছে না তারা।
৪৬.৫ শতাংশ মানুষ এই রাজ্যে ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান। সেটাই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশ- ভারতীয় রাজনীতিতে প্রচলিত কথা, উত্তরপ্রদেশ যাঁর দিল্লির মসনদ তাঁর। দিল্লির ক্ষমতা দখলের পথ উত্তরপ্রদেশ হয়েই যায়। তাই এই রাজ্যে যে শাসনে সেই ভারতের কেন্দ্রে। তবে সমীক্ষা বলছে, গোবলয়ের এই রাজ্যে ফের ক্ষমতায় আসছে বিজেপি। তবে তুলনায় কমবে আসন সংখ্যা। ২৫৯ থেকে ২৬৭টি আসন পেতে পারে পদ্মশিবির। তার কারণ অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বে সমাজবাদী পার্টির ঘুরে দাঁড়ানো। সপা পেতে পারে ১০৯-১১৭টি আসন। মায়াবতীর বিএসপি মাত্র ১২-১৬টি আসন পেতে পারে। ভরাডুবি হতে পারে কংগ্রেসের। সমীক্ষা বলছে, হাত শিবিরের কপালে জুটতে পারে ৩-৭টি আসন।
যদিও বিজেপির ঝুলিতে যেতে পারে ৪৪ শতাংশ ভোট। কারণ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ মানুষ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাজে সন্তুষ্ট। তার উপর রাম মন্দির, হিন্দুত্ববাদের মতো একাধিক ইস্যু বিরোধীদের ধরাশায়ী করার জন্য যথেষ্ট।
গোয়া- এখানেও চালকের আসনে থাকতে চলেছে শাসকদল বিজেপি। ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় ২২-২৬টি আসন পেতে পারে বিজেপি। তবে সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, বিরোধী দল হিসাবে কংগ্রেসকে সরিয়ে আপের উত্থান। আপ পেতে পারে ৪-৮টি আসন। কংগ্রেসের ঝুলিতে যেতে পারে ৩-৭টি আসন। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, আপের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী অনেক হিসেবনিকেশ উল্টে দিতে পারে।
মণিপুর- উত্তর-পূর্বে এই রাজ্যে কোনও অঘটন না ঘটলে ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপি। ৩২-৩৬টি আসন জিততে পারে তারা। এবিপি-সি ভোটারের জনমত সমীক্ষায় উঠে এসেছে, কংগ্রেস ১৮-২২টি আসনে জিতে প্রধান বিরোধী দল হতে পারে। নাগা পিপলস ফ্রন্ট জমি হারিয়ে ২-৬টি আসনে জিততে পারে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন