একুশের মহারণের আগে বাঙালি আবেগ উস্কে দিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-স্বামী বিবেকানন্দের শরণাপন্ন হয়েছে বঙ্গ বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ, জেপি নাড্ডাদের মুখে শুধু বাঙালির আবেগের কবিগুরুর কথা। কিন্তু কয়েকদিন আগে কলকাতায় এসে রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান বিশ্বভারতী বলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। কিন্তু এবার সবাইকে চমকে দিয়ে রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সঙ্গীতই পাল্টে ফেলতে চাইলেন বিজেপি সাংসদ। সুব্রহ্মণ্যম স্বামী প্রধানমন্ত্রীকে দুপাতার চিঠি লিখে জন-গণ-মন-অধিনায়ক বদলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেছেন স্বামী। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বঙ্গে ভোটে জিততে যখন বাঙালি আবেগই ভরসা তখন কেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সঙ্গীত পাল্টে ফেলতে চাইছেন বিজেপি সাংসদ, প্রশ্ন উঠেছে বিদ্বজ্জন মহলে। কেন জন-গণ-মন-অধিনায়ক নিয়ে আপত্তি স্বামীর? জানা গিয়েছে, প্রবীণ বিজেপি নেতার আপত্তি হল সিন্ধু শব্দটি নিয়ে। তাঁর মতে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সঙ্গীতে কয়েকটি শব্দ নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। যা অনাবশ্যক। তাই জন-গণ-মন-অধিনায়কের বদলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজের গাওয়া গানটি পছন্দ স্বামীর। আইএনএ-এর জাতীয় সঙ্গীত প্রথম পংক্তি ছিল 'শুভ সুখ চায়েন'।
আরও পড়ুন ‘বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান’! বিজেপির টুইটে শোরগোল, টিপ্পনী তৃণমূলের
১৯৪৩ সালে নেতাজির নির্দেশে আইএনএ-র দুই সদস্য মুমতাজ হোসেন এবং কর্নেল আবিদ হাসান সাফরানি গানটি লিখেছিলেন, সুর দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিংহ ঠাকুর। কিন্তু জাতীয় সঙ্গীতের শব্দ বদল করা যায় কি? সেক্ষেত্রে চিঠিতে জাতীয় সঙ্গীত বদল নিয়ে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের মন্তব্য উল্লেখ করে যুক্তি দিয়েছেন স্বামী। ১৯৪৯ সালে রাজেন্দ্র প্রসাদ বলেছিলেন, জাতীয় সঙ্গীতের শব্দ পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায়। সিন্ধু শব্দটি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের চিরাচরিত অখণ্ড ভারতবর্ষের তত্ত্বকে সমর্থন করে। তবে স্বামীর আশা, আগামী ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিনের আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে মোদী সরকার।