মনোজ সি জি
হার হার আর হার। ভোটের ফলাফলে দিশেহারা কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রশ্নের মুখে গান্ধীদের নেতৃত্ব। দলের অন্দরেই উঠেছে বিরোধীতার সুর। এই অবস্থায় সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে মরিয়া সনিয়া, রাহুল গান্ধীরা। নজরে ২০২৪। ঘরগুছোতে তাই এখন থেকেই কোমর বাঁধছে হাত শিবির। জয়পুরে বসতে চলেছে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির চিন্তন শিবির। এই শিবির থেকেই দলীয় সংগঠনে আমূল বদলের আভাস মিলতে পারে বলে মনে করছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। নেতাদের বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা থাকবে কিনা তারও ইঙ্গিত মিলতে পারে। মানুষের মন বুঝতে দলের অন্দরেই কমিটি গড়ার প্রস্তাব উঠেছে। এছাড়া, এক পরিবার-একটি টিকিটেরও প্রস্তাব রয়েছে। সংগঠনের সর্বস্তরে যাঁরা ভালো নেতা, কর্মী তাঁদের পুরস্কৃত করা ও অকৃতকার্যদের জবাবদিহি করাও দাবি উঠেছে।
কংগ্রেসে আগেই 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতিতে সিহমোহর পড়েছিল। এবার কী 'এক পরিবার একটি টিকিট' নীতি মান্যতা পাবে? এক্ষেত্রে কী গান্ধী পরিবার ছাড় পাবে? এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক অজয় মাকেন বলেন, 'এক পরিবার, একটি টিকিটের প্রস্তাবে প্রায় ঐকমত্য রয়েছে। গান্ধী পরিবার অবশ্যই ব্যতিক্রম। তবে এটা দেখতে হবে যে, একটি পরিবার থেকে একজন টিকিট পাওয়ার পর অন্যজন দাবিদার হলে তাঁকে অবশ্যই তার আগে অন্তত পাঁচ বছর দলের কাজ করতে হবে।'
উল্লেখ্য, গান্ধী পরিবারের সদস্য হলেও সনিয়া ও রাহুলের আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কোনও বাঁধা থাকছে না। জল্পনা ভোট লড়তে পারেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাও। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি সক্রিয় কংগ্রেসী রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। ফলে ২০২৪ সালের ভোটে লড়তে তাঁরও কোনও অসুবিধা হবে না।
খাতায়-কলমে কংগ্রেস নেতাদের বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। চিন্তন শিবিরে নেতৃত্বের ঊর্ধ্বসীমা কত রাখা হবে সেই নিয়েও আলোচনাও হতে পারে। প্রস্তাব রয়েছে যে, দলের সর্বস্তরের সংগঠনের প্রতিনিধিদের অন্তত ৫০ শতাংশের বয়স পঞ্চাশ বছরের কম হতে হবে। তবে পুরোটাই বোঝা যাবে দলনেত্রী সনিয়ার সূচনা ভাষণের সময়।
ঘুরে দাঁড়াতে স্ট্র্যাটেজিস্ট নিয়োগের ভাবনা চিন্তা ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু, কথা এগোলেও হাত ধরেরনি প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু, মানুষের মন বুঝতে এই ধরণের সংস্থার বা দলের অভ্যন্তরে এই সংক্রান্ত কমিটির দরকার আছে বলে মনে করেন দলের নেত্বত্ব। তাই জনগণের মন বুঝতে একটি ইন-হাউস মেকানিজম - পাবলিক ইনসাইট ডিপার্টমেন্ট - এবং অফিস-বেয়ারারদের কর্মক্ষমতা বিশ্লেষণ করার জন্য একটি মূল্যায়ন শাখা স্থাপনের প্রস্তাব রয়েছে। এক্ষেত্রে সংগঠনের সর্বস্তরে যাঁরা ভালো নেতা, কর্মী তাঁদের পুরস্কৃত করা ও অকৃতকার্যদের জবাবদিহি করাও দাবি উঠেছে।
অজয় মাকেন বলেছেন, 'এটা প্রায়ইবলা হয়, যেসব নেতারা কঠোর পরিশ্রম করেছেন তাদের পুরস্কৃত করা হয়নি এবং যারা কাজ করেনি তাদের থেকে জবাবদিহি চাওয়া হয়নি। তাই আমরা একটি মূল্যায়ন শাখা স্থাপনের কথা ভাবছি। কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের জন্য মানদণ্ড স্থাপন করা হবে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কঠোর করার জন্যও আলোচনা চলছে।'
দলকে পোক্ত করতে প্রস্তাব অনেক রয়েছে। কিন্তু, তার কতগুলি কার্যকর সম্ভব? তা নিয়েই কংগ্রেসের অন্দরে নানা জল্পনা চলছে।
Read in English