একের পর একে ভোটে বিপর্যয়ে ঘটেছে দলের। নেতৃত্বে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শতাব্দী প্রাচীন দলের জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতারা। এই প্রক্ষাপটে দলের শৃঙ্খলাকে গুরুত্ব দিচ্ছে হাত শিবির। মঙ্গলবার কংগ্রেসের এ কে অ্যান্টনির নেতৃত্বাধীন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি পাঞ্জাবে দলের সিনিয়র নেতা সুনীল জাখরকে দু'বছরের জন্য সংগঠন থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে। অন্যদিকে, কেরলের প্রদেশে কংগ্রেসের পদাধিকারী কেভি থমাসকে আপাতত দলীয় সাংগঠনিক পদ থেকে অপসারণের সুপারিশ করেছে।
পাঞ্জাব নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। মুখ্যমন্ত্রী চান্নি ও প্রদেশ কংগ্রেস সবাপতি সিধুর দ্বন্দ্বে জেরবার অবস্থা হয় দলের। সেই সময় ওই রাজ্যের সিনিয়ার কংগ্রেস নেতা সুনীল জাখরের আচরণ ও মন্তব্যের জেরে অস্বস্তিতে পড়েছিল হাত শিবির। যা নিয়ে পাঞ্জাবের এআইসিসি ইনচার্জ হরিশ চৌধুরী কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। সম্পূর্ণ বিষয়টি দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির কাছে পাঠান সভানেত্রী। এরপরই এ দিন জাখরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
জাখরকে এর আগে শোকজ নোটিল পাঠিয়েছিল কংগ্রেসের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। কমিটির সদস্য তথা দলের সচিব তারিক আনোয়ার চৌধুরীর সেখা চিঠিতে জাখরের থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, 'আপনি কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন এবং সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারায় নেতৃত্বের উদ্দেশ্যকে দায়ী করেছেন। এটি পার্টির নীতি লঙ্ঘন করেছে। এরপরও কেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না?'
গুরুদাসপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ জাখর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নিকে দলের'দায়' হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন। এবং দাবি করেন যে, তিনি হিন্দু হওয়ায় দল তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে বেছে নেয়নি। যা ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল।
সম্প্রতি কেভি থমাস দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে কান্নুরে আয়োজিত সিপিআই-এম-এর পুার্টি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে কেরল কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরণও দলের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন। থমাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুরও সিপিএমের ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে অন্য দলের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। কিন্তু থমাস নির্দেশ না মানায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায় তাঁর ঘাড়ে পড়ে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী এবং বাম নেতা পিনারাই বিজয়নের প্রশংসা করার জন্য থমাসকে দলীয় নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। ফলে অস্বস্তি বাড়ে হাত শিবিরের। এই পরিস্থিতি কংগ্রেসের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি থমাসকে দলের সব সাংগঠনিক পদ থেকে আপাতত দূরে রাখার সুপারিশ করেছে।
তবে, সুপারিশগুলি বাস্তবায়িত হবে কিনা তা স্থির করবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।
Read in English