ডিলিমিটেশন কমিশন জম্মুর জন্য বিধানসভা আসনের সংখ্যা ৪৩ এবং কাশ্মীর উপত্যকায় ৪৭টিতে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছে। ২৪টি আসন পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জন্য বরাদ্দ। কমিশনের প্রস্তাবে জম্মু ও কাশ্মীরে তফসিলি জাতিদের জন্য ৯টি এবং তফসিলি উপজাতিদের জন্য ৭টি আসন রয়েছে।
সোমবার কমিশনের তরফে বৈঠক হয়। সেখানে ওই কমিশনের পাঁচ অ্যাসোসিয়েট সদস্য ছিলেন। এঁরা হলেন উপত্যকার পাঁচ জন সাংসদ। প্রস্তাবের বিষয়ে চলতি মাসের মধ্যেই কমিশনের কাছে মতামত পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিশনের প্রস্তাবে সন্তুষ্ট বিজেপিনেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জীতেন্দ্র সিং। তাঁর কথায়, 'যুক্তিপূর্ণ নথির ভিত্তিতে কমিশন আসন পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব দিয়েছে। দল নির্বিশেষে সকলেই কমিশনের কাজ ও যে মানদণ্ডের ভিত্তিতে প্রস্তাব তৈরি হয়েছে তার প্রশংসা করেছে।'
কিন্তু, উপত্যাকার দলগুলি ডিলিমিটেশন কমিশনের প্রস্তাবের সমালোচনায় মুখর। মেহেবুবা মুফতির দাবি, এই প্রস্তাব বিজেপির স্বার্থ দেখা তৈরি ও জম্মু-কাশ্মীরকে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস।
ডিলিমিটেশন কমিশনের প্রস্তাব প্রসঙ্গে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সবসভাপতি তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার দাবি, 'কমিশনের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। প্রস্তাবে জম্মুর জন্য ৬টি ও কাশ্মীরের জন্য মাত্রা ১টি বাড়তি বিধানসভা আসনের কথা বলা হচ্ছে। যা ২০১১-র আদমসুমারি অনুযায়ী কোনও মতেই যুক্তিগ্রাহ্য নয়।'
পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতি বলেছেন, 'আমার অনুমানই সঠিক। এরা আদমসুমারি না মেনেই জম্মুর জন্য ৬টি ও কাশ্মীরের জন্য মাত্রা ১টি বাড়তি বিধানসভা আসনের প্রস্তাব দিয়েছে। আসলে ধর্ম ও আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াতে চাইছে এই কমিশন। আসল এদের লক্ষ্য হল জম্মু ও কাশ্মীরে এমন এক সরকার প্রতিষ্ঠা করা যা অগাস্ট ২০১৯-এর বেআইনি এবং অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তগুলিকে বৈধতা দেবে।'
জম্মু-কাশ্মীর আপনি পার্টিও জম্মু-কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাস সম্পর্কিত ডিলিমিটেশন কমিশনের প্রস্তাব
খারিজ করেছে। পক্ষপাতহীনভাবে জনসংখ্যার নথির ভিত্তিতে বিধানসভা আসন পুনর্বিন্যাসের দাবি জানিয়েছে এই দল। এই কাজে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ আদমসুমারির ভিত্তি করে জনসংখ্যার পরিবর্তনের উপর কোনও অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি নির্ধারিত হয়ে তাকে। ফলে বিধানসভার সীমানা পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন পড়েয যা ডিলিমিটেশন কমিশন করে থাকে। জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনে ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া চলে। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর, সরকার ২০২০-র ৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জন প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে ডিলিমিটেশন কমিশন গঠন করেছিল।
নিয়োগের ১ বছরের মধ্যে কমিশনের রিপোর্ট পেশের কথা ছিল। কিন্তু কোভিড লকডাউনের কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটে। যার ফলে চলতি বছর মার্চে আরও ১ বছরের জন্য কমিশনের কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল অনুসারে, জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা আসনের সংখ্যা ১০৭ থেকে ১১৪ করতে হবে। যার ফলে জম্মু অঞ্চল উপকৃত হবে বলে আশা।
Read in English
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন