অন্য কোনও দল না। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ সমাজবাদী পার্টি। সোমবার নির্বাচনী প্রচারে কার্যত তা স্পষ্ট করে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। ভোটপ্রচারে তাঁর নিশানায় থাকল সমাজবাদী পার্টি নেতৃত্ব। বিজনৌরের ভার্চুয়াল সভায় মোদীর অভিযোগ, ভুয়ো সমাজবাদী এবং তাঁর বংশানুক্রমিক রাজনৈতিক সাম্রাজ্যের দৌলতেই থমকে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়ন। 'ডবল ইঞ্জিন' সরকারের যে ধারণা বিজেপির প্রচারের অংশ, উত্তরপ্রদেশে তার কান্ডারি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
হিন্দুত্বের এই ' পোস্টার বয়'কে এবার উন্নয়নের কান্ডারি হিসেবে প্রচারে জোর দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তারই অঙ্গ হিসেবে সোমবার ভার্চুয়াল সভায় মোদী বোঝানোর চেষ্টা করেন যে বিজনৌর, মোরাদাবাদ এবং আমরোহায় যেটুকু উন্নয়ন ঘটেছে, সবটাই যোগী জমানায়। আগামী সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ৫৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এই ৫৫টি আসনের অন্যতম বিজনৌর, মোরাদাবাদ এবং আমরোহা। নির্বাচনের ঠিক একসপ্তাহ আগে সোমবার মোদী তাই সেরে ফেললেন দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের প্রচার।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে রামমন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে হিন্দুত্বের ভাবাবেগ চরমে নিয়ে যেতে চেয়েছিল সংঘ পরিবার। কিন্তু, জোট রাজনীতির স্বার্থে তারা সেটা পারছে না। কারণ, এর মধ্যেই হিন্দুত্ব ইস্যুতে এনডিএ শরিক আপনা দল ( সোনেলাল) বিজেপির বিরোধিতা করেছে। দলের নেত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা বিজেপির চেয়ে আদর্শগত ভাবে আলাদা। জনগণ আমাদের হিন্দুত্ব এবং এই জাতীয় বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আমি এই সব ব্যাপারে যুক্ত নই। আর আমার দল সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে না। আমরা সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে। সেটাই আমাদের মতাদর্শ।' আর, এই কারণেই উত্তরপ্রদেশে মোদীর প্রচারে হিন্দুত্বের বদলে উন্নয়নের কথাই উঠে আসছে বারবার।
আরও পড়ুন প্রণব সাক্ষাতে ‘ঘরওয়াপসি’ নিয়ে সব প্রশ্নের উত্তরে তৈরি ছিলেন ভাগবত
উত্তরপ্রদেশ যখন মোদীর প্রচারে সরগরম, তখন পঞ্জাবে ভোটের মুখে গোঁসা এবং অভিমানের রাজনীতির সাক্ষী হল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, এবারের নির্বাচনে তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী থাকছেন চরণজিৎ সিং চান্নি। এই দৌড়ে নভোজোৎ সিং সিধুর সঙ্গে ছিলেন প্রবীণ নেতা সুনীল জাখরও। কিন্তু, দল তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী না-করায় ক্ষুব্ধ জাখর নির্বাচনী রাজনীতি থেকে ইস্তফাই দিয়ে দিলেন। যদিও এখনই তিনি কংগ্রেস ছাড়ছেন না-বলেও জানিয়েছেন। একইসঙ্গে চরণজিৎ সিং চান্নিকে কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করায় রাহুল গান্ধীর প্রশংসাও করেছেন জাখর।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এই প্রসঙ্গে সোমবার বলেন, 'পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থেকে কাউকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনের অসাধারণ সিদ্ধান্তই শুধু না। এটা প্রমাণ করল তিনি নিজের বিশ্বাসের প্রতি আস্থাশীল।' চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করায় রাহুল গান্ধীর প্রশংসা করেছেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেও। প্রতিক্রিয়ায় খাড়গে বলেন, ' দেশে এই প্রথমবার কোনও দলিত সম্প্রদায়ের কাউকে কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করল। পঞ্জাবের জনগণও এটা গ্রহণ করবে। কারণ, চান্নি সাধারণ মানুষের জন্য বহু উন্নয়ন করেছেন।'