শনিবারই ভগবন্ত মান মন্ত্রিসভার ১০ ক্যাবিনেট মন্ত্রী শপথ নিলেন। এঁদের কয়েকজনের নামের সুপারিশ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। বাকিদের নাম বিবেচিত হয়েছে দিল্লি থেকে। তবে, ক্যাবিনেটে ঠাঁই হয়নি মন্ত্রী হওয়ার জল্পনায় থাকা দ্বিতীয়বারের বেশ কয়েকজন বিধায়কের। নেই হেভিওয়াটদের হারিয়ে দেওয়ারাও। যা ঘিরে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। তবে, তা প্রকট হয়নি। কিন্তু, এই ক্ষোভে মলম দেওয়া না হলে ক্রমেই বিপদের আশঙ্কা বাড়তে পারে বলে অনুমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
আমান অরোরা, সর্বজিৎ কৌর মানুকে, বলজিন্দর কৌর এবং প্রিন্সিপাল বুধ রাম। এঁরা প্রত্যেকেই পাঞ্জাবে আপের দ্বিতীয়বারের বিধায়ক। ছিলেন মন্ত্রি পদ পাওয়ার দৌড়ে। কিন্তু, এঁদের কাউকেই মান নিজের ক্যাবিনেটে জায়গা দেননি। বাদ পড়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আইপিএস অফিসার কুনওয়ার বিজয় প্রতাপ। কুনওয়ার বিজয় সরকারি চাকরি ছেড়ে আপে যোগ দিয়েছিলেন। এই পদত্যাগী আইপিএস-ই কেজরিওয়ালকে ভবিষ্যতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরেছিলেন।
সুনাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৭৫ হাজারের বেশি ভোটে জয় পেয়েছেন আপের আমন আরোরা। এই নিয়ে তাঁর দ্বিতীয়বার জয়। কেন তিনি মান মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেলেন না? হতাশা চেপেই আমন আরোরা বলেছেন, 'হয়তো আমি প্রত্যাশাকে ছুঁতে পারিনি। ভবিষ্যতে আরও বালো করার চেষ্টা করব। আমি দলের ক্ষুদ্র কর্মী।'
যদিও, সর্বজিৎ কৌর মানুকে নিজের অসন্তোষ গোপন করেননি। মন্ত্রী পদ না পাওা প্রসঙ্গে জাগরণের দ্বিতীয়বারের বিধায়ক মানুকে বলেছেন, 'মন্ত্রী হওয়ার মানদণ্ড দলের তরফে কী ছিল আমি জানি না। শুধু এটাই বলেতে চাই যে, দল যা সিদ্ধান্ত নিয়ে, তা আনন্দের সঙ্গে মানতে হবে।'
বুধলাদার দ্বিতীয়বারের বিধায়ক প্রিন্সিপাল বুধ রামের কথায়, 'আমি মন্ত্রী হওয়ার জন্য লবি করিনি বা কাউকে চাপ দিনি। এটা দলের সিদ্ধান্ত। তবে বলবতে চাই যে জ্যেষ্ঠতা উপেক্ষিত। উদাহরণস্বরূপ, ক্যাবিনেট মন্ত্রী ডঃ বলজিৎ কৌর, ফরিদকোটের প্রাক্তন সাংসদ অধ্যাপক সাধু সিংয়ের কন্যা। তারাও দলে অবদান রেখেছেন।' বলজিৎ কৌর অবশ্য বলছেন, তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন।
মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি জায়ান্ট কিলার বিধায়করাও। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত বলেই সূত্রের খবর। কমপক্ষে ছয়জন বিধায়ক আছেন যাঁরা বিজেপি, কংগ্রেস ও আকালী দলের বড় নেতাদের পরাজিত করেছেন। ফলে জয়ীদের সবাইকে মন্ত্রী করা যেত না। ফলে এক-দু'জনকে মন্ত্রী করার থেকে সবাইকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। আপের এখ শীর্ষ নেতার দাবি, ঝাড়ুর প্রতি মানুষের আস্থা থাকাতেই এই ব্যাপক সাফল্য মিলেছে। পাঞ্জাবে জয় দলের কোনও ব্যক্তির সাফল্য নয়।
গুরমিত খুদ্দিয়ান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদলকে পরাজিত করেছেন। জগদীপ কাম্বোজ গোল্ডি প্রাক্তন ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদলকে হারিয়েছেন। ডাঃ জীবন জ্যোত কৌর নভজ্যোত সিধু এবং বিক্রম মাজিথিয়াকে পরাজিত করেছেন। লাভ সিং উঘো মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং, মুখ্যমন্ত্রী চান্নিকে যথাক্রমে ভাদৌর এবং চমকৌর সাহেব থেকে পরাজিত করেছেন। এ পি এস কোহলি পাতিয়ালা আরবান থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংকে পরাজিত করেছেন। এঁদের কাউকেই ক্যাবিনেট দেখা যাবে না।
কেন দ্বিতীয়বারের বিধায়কদের মন্ত্রী করল না আপ? দলীয় সূত্রে খবর, এঁদের অনেকেই ভোটের কয়েক মাস আগে কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়েছিল। দলত্যাগের সম্ভাবনাও ছিল। যেমন,
বলজিন্দর কৌর বিধায়ক হিসাবে তার নির্বাচনী এলাকার সাথে যোগাযোগ রাখেননি বলে জানা গেছে।
তবে, বাদ পড়াদের সম্ভাবনা একেবারেই শেষ হয়ে যানি। কারণ মান মন্ত্রিসভায় সর্বাধিক ১৭ জন মন্ত্রী হতে পারেন। এখন ক্যাবিনেট মন্ত্রী সংখ্যা ১০ জন। আরও ৭টি আসন ফাঁকা রয়েছে।
Read in English