উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক মহলে সম্প্রতি রদবদল এবং মন্ত্রীদের অসন্তোষ ব্যাপকহারে আলোচনায় উঠে এসেছে। এনিয়ে এক বৈঠকে এমন কিছু বিষয় উঠে এসেছে, যাতে চোখ কপালে ওঠার মত। অতীতে দেখা গিয়েছে, যোগী আদিত্যনাথের কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকা উত্তরপ্রদেশ সরকারে রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল কার্যত নখদন্তহীন। যেন পিছনের সারিতে বসে থাকা কেউ। সেই আনন্দীবেনকেই কিন্তু, এবার দেখা গেল যোগী-সহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করতে।
চার ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলল। সেখানে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রীরা তাঁদের দফতরের কাজকর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত খতিয়ান পেশ করলেন। তুলে ধরলেন সমস্যার কথাও। আর, আনন্দীবেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে মন্ত্রীদের পরামর্শ দিলেন। অবশ্য বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর পক্ষে যতটুকু পরামর্শ দেওয়া সম্ভব, ততটুকুই।
অতীতে উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বারবার রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে সংঘাত দেখা গিয়েছে। বহু সময়ই দেখা গিয়েছে যে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে দিচ্ছেন। নিয়োগ বা বিলের বিষয়ে আপত্তি তুলে অসন্তোষ জানাচ্ছেন। কিন্তু, আনন্দীবেন প্যাটেলের জমানায় যোগী সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের শুধুমাত্র সহাবস্থানই দেখেছেন উত্তরপ্রদেশবাসী। এটা ছিল রাজ্যপাল আনন্দীবেনের ভাষায় 'একত্রিত' হওয়ার অনুষ্ঠান। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তো বটেই, ক্যাবিনেট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা, ৫২ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন- ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’, মাস্ক খুলে চিৎকার পার্থের
আশ্চর্যজনক বিষয়টি হল, এই বৈঠক অন্য একটি কারণে অতি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেটা হল, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা পরম্পরা। যেখানে মন্ত্রিসভার অভ্যন্তরীণ গোলমাল বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের মন্ত্রীরা বারবার দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন। যেমন উত্তরপ্রদেশের জলশক্তি মন্ত্রী দীনেশ খটিক। তিনি অতীতে নিজের সরকারের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দ্বারস্থ হয়েছেন। শাহের কাছে পদত্যাগপত্র পর্যন্ত পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় পর্যন্ত প্রকাশ্যে এসেছে।
চিঠিতে খটিক তাঁর বিভাগে বদলিতে বেনিয়মের অভিযোগ করেছেন। তাঁর প্রধান সচিবদের কাছে অভিযোগ করেছেন যে তিনি একজন দলিত হওয়ায় তাঁকে বারবার উপেক্ষা করা হচ্ছে। এমনকী, তাঁর পদত্যাগপত্র রাজভবনে পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। আর, সেসব নিয়েই যেন এখনও ডামাডোলের মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। যেখানে ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করলেন রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল।
Read full story in English