রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের আদর্শ জাতীয়তাবাদ। আর জাতীয়তাবাদের অনন্য অঙ্গ সংবিধান। কিন্তু, এবার আরএসএসের মুখে শোনা গেল অন্য সুর। জাতীয়তাবাদী এই সংগঠনের অভিযোগ, সংবিধানের নামে উন্মাদনা বাড়ছে। কিন্তু, আচমকা এমন কথা কেন আরএসএসের মুখে? উলটপুরাণ নাকি! এই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। আর, এই প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কার করে দিয়েছে আরএসএস নিজেই। জানিয়েছে, ধর্মীয় এবং সাংবিধানিক স্বাধীনতার দাবির আড়ালে বাড়ছে উন্মাদনা।
শুধু তাই নয়, এই ব্যাপারে এক বিশেষ সম্প্রদায়কে নিশানাও করেছেন আরএসএস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, সংবিধানকে ব্যবহার করে শাসনযন্ত্র দখলের ফন্দি এঁটেছে এক নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ। শনিবারই প্রকাশিত হয়েছে আরএসএসের চলতি বছরের বার্ষিক রিপোর্ট। সেই প্রতিবেদনে এই হুমকি রুখতে সর্বস্তরীয় এবং সাংগঠনিক শক্তি প্রয়োগের ডাক দিয়েছে সংঘ।
বার্ষিক রিপোর্ট বা প্রতিবেদনে আরএসএস বলেছে, 'বাড়ন্ত ধর্মীয় উন্মাদনার শক্তিশালী রূপ দেশের বিভিন্ন অংশে মাথাচাড়া দিচ্ছে। কেরল এবং কর্ণাটকে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা এই হুমকির অন্য রূপ। বিভিন্ন জঘন্য কাজকর্ম সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা বাড়াচ্ছে। সভা, প্রদর্শন, সামাজিক রীতি, প্রথা, নিয়ম ভাঙার মতো ঘটনা চলছে সাংবিধানিক এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার আড়ালে। সামান্য উসকানিতেই হিংসার মতো ঘটনা ঘটছে। বেআইনি কাজে মদতদান চলছে।'
আরএসএসের মতে, সবটাই আসলে ষড়যন্ত্র। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যপূরণের জন্য চালানো হচ্ছে বিভিন্ন কাজকর্ম। সংখ্যার ভিত্তিতে যে কোনও ভাবে লক্ষ্যপূরণের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে কর্নাটকের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা ইস্যুতে আন্দোলন চলছে। সেই পরিস্থিতিতে এক বিশেষ সম্প্রদায়কে মাথায় রেখে এই রিপোর্ট প্রকাশ করল সংঘ।
আরও পড়ুন- ফের ব্যাপকহারে বাড়ল করোনা সংক্রমণ! আবারও ঘোষণা লকডাউনের
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বার্ষিক প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, ' দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দুদের ধর্মান্তরণ চলছে। বিশেষ করে অভিযোগ আসছে পঞ্জাব, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলো থেকে। এই সব প্রতিকূলতার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। কিন্তু, সম্প্রতি সেগুলো রূপ বদলে আত্মপ্রকাশ করেছে। এটা সত্যি যে হিন্দুত্ববাদী সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা পরিমাণে হলেও জেগে উঠেছে। এই সমস্যা রুখতে যৌথভাবে এবং একসঙ্গে চেষ্টা চালাতে হবে বলেই রিপোর্টে সংঘ জানিয়েছে।'
Read story in English