/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/02/karnataka_justice.jpg)
হিজাব মামলার শুনানি শুনছেন বিচারপতিরা।
হিজাব-কাণ্ডে 'ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া' (সিএফআই)-র ভূমিকা জানতে চাইল কর্নাটক আদালত। বুধবার ছিল মামলায় নবম দিন। শুনানিতে ওই সংগঠনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চায় আদালত। ২০১৪ সাল থেকেই কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পোশাকবিধি চালু আছে। কিন্তু, আচমকা হিজাব নিয়ে এত বিক্ষোভের কারণ কী? বুধবার এই প্রশ্নেই ঘুরপাক খেল হিজাব মামলার শুনানি।
সম্প্রতি উদুপির সরকারি পিইউ কলেজ ফর গার্লসের ছয় পড়ুয়া এক সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের আয়োজন করেছিল 'ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া' (সিএফআই)। সেই সাংবাদিক বৈঠকে ওই পড়ুয়ারা উদুপি কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলেজে হিজাব পরে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। এর তিন দিন আগে, ওই পড়ুয়ারা ক্লাসে হিজাব পরার প্রবেশাধিকার চেয়ে উদুপির ওই কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন।
উদুপির সরকারি পিইউ কলেজ ফর গার্লসের আইনজীবী এসএস নাগানন্দ জানান, বিতর্কের সূত্রপাত সেখানেই। ওই কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকরাও আদালতে দাবি করেন, অভিযোগকারী ছাত্রীরা সিএফআইয়ের অনুগত। তাঁদের কথা মন দিয়ে শোনেন কর্নাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রীতুরাজ অবস্তি, বিচারপতি জেএম খাজি ও বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিত।
কলেজের অধ্যক্ষ রুদ্রে গৌড়া জানান, আগে পড়ুয়ারা হিজাব পরে কলেজে প্রবেশ করত। কিন্তু, তা ক্লাসরুমে খুলে রাখত। তিনি জানান, তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গত ৩৫ বছরের ঐতিহ্যে হিজাব পরে ক্লাস করার ঘটনা ঘটেনি। সেই কারণে, এই নিয়ে কোনও বিধিও তাঁরা চালু করেননি। যে পড়ুয়ারা ক্লাসে হিজাব পরার দাবি জানাচ্ছিল, তাদের পিছনে বাইরের শক্তির হাত ছিল বলেই অধ্যক্ষ দাবি করেন।
আইনজীবী নাগানন্দ জানান, সিএফআই শুধু ওই সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা কর্নাটকের বিভিন্ন কলেজে বিক্ষোভ কর্মসূচিরও ডাক দিয়েছে। তাদের নেতৃত্বেই ক্লাসে হিজাব পরার দাবিতে কর্নাটকের বিভিন্ন কলেজে বিক্ষোভ হচ্ছে। ওই সংগঠন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে হিজাব পরার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বলেই আইনজীবী নাগানন্দ জানান।
অন্য এক আইনজীবী জানান, সিএফআই একটি মৌলবাদী ছাত্র সংগঠন। সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ওই সংগঠনকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি রীতুরাজ অবস্তি জানতে চান, সিএফআইয়ের এই কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কর্নাটক সরকার কি ওয়াকিবহাল? জবাবে আইনজীবী নাগানন্দ জানান, গোয়েন্দা সংস্থা আইবি বিষয়টা জানে।
প্রধান বিচারতি এরপর কর্নাটকের অ্যাডভোকেট জেনারেল প্রভুলিঙ্গ কে নাভাদগির মাধ্যমে কর্নাটক সরকারকে সিএফআই সংগঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দেন। প্রধান বিচারপতি রীতুরাজ অবস্তির এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, কর্নাটক সরকারও বিষয়টি জানে।
এতে প্রধান বিচারপতি অবাক হয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাহলে এতদিন ওই সংগঠনের নাম এই মামলায় চেপে রাখা হয়েছিল কেন? আইনজীবী নাগানন্দ জবাবে জানান, বেশ কয়েকজন শিক্ষককে সিএফআই সংগঠনের সদস্যরা হুমকি দিয়েছে। সেই কারণে ওই শিক্ষকরা সিএফআই সংগঠনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন।
তার প্রেক্ষিতে বিচারপতি দীক্ষিত প্রশ্ন তোলেন, কতদিন আগে হুমকি দিয়েছে? জবাবে আইনজীবী জানান, বেশ কিছুদিন আগে। শুনে বিচারপতি দীক্ষিত উষ্মা প্রকাশ করেন। এই পরিস্থিতিতে অ্যাডভোকেড জেনারেল জানান, তাঁরা বিষয়টি জানতেন না। সেই কারণে, হুমকির ব্যাপারে কিছু বলতে পারবেন না।
Read story in English