প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীন সংসদ থেকে ওয়াকআউট করল কংগ্রেস। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদজ্ঞাপন প্রস্তাবের ওপর প্রশ্নোত্তর পর্ব চলছিল। সেখানে বিরোধীদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু, তিনি সেটা না-করে কংগ্রেসকে দোষারোপ করছিলেন। তাতে রীতি ভঙ্গ হয়েছে সংসদের। সেই কারণেই কংগ্রেস সাংসদরাও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীন সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেছেন।
মঙ্গলবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ধন্যবাদজ্ঞাপন প্রস্তাবের ওপর প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পুরোদস্তুর আক্রমণের পথ নেন। দেশের বিভিন্ন সমস্যার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, কংগ্রেস না-থাকলে জরুরি অবস্থা, শিখ দাঙ্গা, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘর হারানোর মত কোনও ঘটনাই ঘটত না। এতেই না- থেমে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কংগ্রেস শহুরে নকশালপন্থীদের কবজায় চলে গিয়েছে। বর্তমানে এই শহুরে নকশালপন্থীরাই কংগ্রেসের চিন্তা এবং আদর্শকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
কংগ্রেসের বিরুদ্ধ বলতে গিয়ে লতা মঙ্গেশকরের প্রসঙ্গও টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, কংগ্রেসের জমানায় লতা মঙ্গেশকরের ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরকে অল ইন্ডিয়া রেডিও থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। লতা মঙ্গেশকরদের পরিবার গোয়া থেকে মহারাষ্ট্রে এসেছিলেন। তাঁর ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর রেডিওয় বীর সাভারকরের কবিতা পরিবেশন করেছিলেন। সেই কারণেই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরকে রেডিও থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন স্বাধীনতার অধিকার: কংগ্রেসকে নিশানা মোদীর, স্মরণ করান লতার ভাইকে AIR থেকে বরখাস্তের ঘটনা
প্রধানমন্ত্রীর এই সব অভিযোগের কড়া সমালোচনা করে মল্লিকার্জ্জুন খাড়গে বলেন, 'কক্ষে সেই সময় বিভিন্ন দলের সাংসদরা ছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যাপারে কথা বলছিলেন। সেই সময় তিনি ( মোদী) প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে উচ্চবাচ্য না-করে স্রেফ কংগ্রেসকে নিশানা করেন। তিনি গান্ধীজিকে স্মরণ করছেন। যাঁরা গান্ধীজির হত্যাকারীদের পুজো করেন, তাঁরা এখন কংগ্রেসকে তুলে দেওয়ার কথা বলছেন '।
কংগ্রেস সাংসদ পি চিদাম্বরম আবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য না-রাখার অভিযোগ এনেছেন। চিদাম্বরমের কথায়, 'সংসদে জানতে চাওয়া হয়েছিল, টুকরে টুকরে গ্যাংয়ের সদস্য কারা ? মন্ত্রী বলেছেন, কোনও তথ্য নেই। টুকরে টুকরে গ্যাং নিয়ে কোনও তথ্য নেই, অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু নিয়ে কোনও তথ্য নেই, নদীতে দেহ ছুড়ে ফেলে দেওয়া নিয়ে কোনও তথ্য নেই, পরিযায়ী শ্রমিকদের হেঁটে ঘরে ফেরা নিয়ে কোনও তথ্য নেই। এই কেন্দ্রীয় সরকার আসলে তথ্যহীন সরকার'।