বয়স ৯৪। কিন্তু, তাতে কী! এখনও চোখে ভেসে বেড়াচ্ছে সদ্য যৌবনার মতো সমাজ বদলের স্বপ্ন। আর, সেই স্বপ্নকে স্বার্থক করতে বুধবারও চেন্নাইয়ের বেসান্ত নগরের অলিগলি চষে বেড়ালেন সমাজকর্মী কামাক্ষী সুব্রমনিয়ন। পরাধীন ভারতে সমাজকর্মীদের মধ্যে অন্যতম জ্যোতিষ্ক অ্যানি বেসান্ত। তাঁর নামেই চেন্নাইয়ের এই বেসান্ত নগর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের কাছেই বছর ৯৪-এর এই 'আম্মা' আসলে জলজ্যান্ত 'অ্যানি বেসান্ত'।
স্বপ্নই তাঁকে এবারের ভোটে প্রার্থী করেছে। দেখে অবশ্য বয়স বোঝার উপায় নেই। তবে, শরীর তো! বয়সের একটা ছাপ রেখে দিয়ে যাবেই। তাই হাঁটতে হয় সাবধানে। রাস্তার উঁচু-নিঁচু, খানা-খন্দ এড়াতে এই সমাজকর্মীর তাই ভরসা কমবয়সি সহকর্মীদের শক্তপোক্ত হাত।
যে বয়সটা বিশ্রামের সময়। সেই বয়সে এসে চেন্নাই পুরভোটে প্রার্থী। তা-ও আবার নির্দল? এতটা মনের জোর কোথায় পেলেন? প্রশ্নটা শুনেই ৯৪-এর সুইট গার্লের মুখ থেকে বেরিয়ে এল প্রতিবাদের আগুন। বললেন, 'সব দল টাকা নিয়ে উন্নয়নের কাজ করে। আমার ৯৪ বছর বয়স। আমি টাকা নিয়ে কী করব! আমাকে ভোট দিলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এলাকাটাকে সুন্দর করে তুলব।'
ভোটাররা কিন্তু, মন দিয়েই ১৭৪ নম্বরের প্রার্থীর মুখ থেকে এই সব কথা শুনছেন। বুধবার কামাক্ষী ঘুরলেন উলুর ওলকট কুপ্পাম এলাকায়। একদিনে বেশিদূর ঘোরার ধকল শরীর নেয় না। গলাও বাজখাঁই স্বরে চিত্কারের অনুমতি দেয় না। বিভিন্ন দলের নেতা- নেত্রীদের মতো কাড়ি কাড়ি টাকা নেই। তাই ভাড়া করেছেন মাইক। ধরিয়ে দিয়েছেন সঙ্গীর হাতে।
আরও পড়ুন- ভোটপ্রচারে কংগ্রেসকেই কার্যত আপের বাপ বানিয়ে ছাড়লেন মোদী
একটা অটোরিকশাও ভাড়া করেছেন। কখনও হেঁটে, কখনও অটোয় চেপে। যতটা হয়, এভাবেই চলছে, সমাজ বদলের স্বপ্নে বিভোর কামাক্ষী সুব্রমনিয়নের প্রচার। অ্যানি বেসান্ত নগরের বাসিন্দারা তাঁদের এই নবতিপর প্রার্থীকে যতই দেখছে, ততই যেন অবাক হয়ে যাচ্ছে।
শনিবার ভোট। তাঁর আহ্বানে সাড়া দেবেন চেন্নাইয়ের ১৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা? জেতাবেন? জলজ্যান্ত অ্যানি বেসান্ত অবশ্য গণকঠাকুর নন। সেটা জানেনও না। শুধু জানেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বদলের স্বপ্নের মায়াজাল বুনে দিতে।
Read story in English