আগে দেশের স্বার্থ দেখতে হবে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি জানান, বিশ্বকে জ্ঞান দেওয়ার চেয়েও দেশের স্বার্থরক্ষা করাই ভারতের জন্য বেশি দরকার। মন্ত্রী গণবিধ্বংসী অস্ত্র এবং তার সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কে বলছিলেন। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন, ২০২২ সংশোধনী বিল নিয়ে সংসদে বিতর্ক চলছিল। তখনই জয়শংকর দেশের স্বার্থরক্ষার কথা বলেন। এই বিতর্কে ২১ জন সাংসদ অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'আজ বিশ্বকে জ্ঞান দেওয়া সংক্রান্ত বিদেশনীতি নিয়ে আমাদের কম ভাবলেও চলবে। আমাদের নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। নিজেদের অবদান রাখতে হবে। আমাদের জাতীয় স্বার্থের দিকে তাকাতে হবে। আমাদের এটা খুবই কার্যকরী ভাবে করতে হবে।'
রাজনৈতিক মহলের একাংশ অবশ্য বিদেশমন্ত্রীর এই সব মন্তব্যে আত্মসমালোচনাই খুঁজে পেয়েছে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী। সেখানে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়ে এসেছেন। অথচ, দেশেই এখন জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্বের বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে প্রায় প্রতিদিনই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর আগে ভারতকে বিশ্বের জ্ঞানগুরু হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। ঠিক যেন তার উলটো কথাই শোনা গেল বিদেশ মন্ত্রকের প্রাক্তন আমলা তথা বর্তমান বিদেশমন্ত্রীর মুখে।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় রাশিয়া-ইউক্রেন প্রসঙ্গ টেনে কেন্দ্রীয় সরকারের কূটনীতিকে নিষ্ক্রিয় বলে কটাক্ষ করেন। জবাবে জয়শংকর জানান, বর্তমানে ঝগড় রাশিয়া আর ইউক্রেনের মধ্যে চলছে। সেখানে ভারত কিছু বলার কে? জয়শংকর জানান, তবুও উভয়পক্ষের সঙ্গেই কথা বলা হয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কূটনীতির ব্যাপারে ভীষণই মনোযোগী। এরপর বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন, ২০২২ সংশোধনী বিল লোকসভায় সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়ে যায়। জয়শংকর জানান, এই বিল পাশের ফলে ভারতের জাতীয় সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি আরও বাড়ল।
Read story in English