রবিবারই জাতীয় রাজনীতির আকাশে নক্ষত্রপতন হয়েছে। কোমায় আচ্ছন্ন অবস্থাতেই প্রয়াত হয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিং। ৯ বারের সাংসদ এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় একাধিক মন্ত্রক সামলানো যশবন্ত সিংয়ের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে রাজনৈতিক মহলে। তবে সাফল্য থাকলেও বিতর্কও কম ছিল না যশবন্তের রাজনৈতিক জীবনে। একদা পার্টি থেকে বহিষ্কৃত যশবন্ত ২০১৪ সালে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হয়ে লোকসভা ভোটে লড়েছিলেন। কিন্তু জিততে পারেননি। করোনা কালে নীরবেই চলে গেলেন মোদীবিরোধী এই প্রাক্তন মন্ত্রী।
যশবন্ত সিংয়ের জীবনে অন্যতম বিতর্কিত অধ্যায় ছিল ১৯৯৯ সালে কান্ধাহার বিমান অপহরণ কাণ্ড। এয়ার ইন্ডিয়ার আইসি-৮১৪ ফ্লাইট অপহরণ করে জৈশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠী। তাদের দাবি ছিল, ভারত সরকারকে জঙ্গিদের শীর্ষনেতা আজহার মাসুদ-সহ একাধিক সন্ত্রাসীকে মুক্তি দিতে হবে। জঙ্গিমুক্তি নিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে সমঝোতা করেও লাভ হয়নি। মাসুদের বিনিময়ে অপহৃত যাত্রীদের মুক্তি দেয় জঙ্গিরা। সেইসময় বিরোধীদের প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল দেশ। মাসুদের মতো কুখ্যাত জঙ্গিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রবল সমালোচিত হয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকারের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন যশবন্ত। তিনিই মাসুদকে সঙ্গে নিয়ে কান্ধাহার বিমানবন্দরে জঙ্গিদের সঙ্গে সমঝোতা করতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিং
১৯৯৮ সালে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা এবং তার জেরে আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার সময়ে বিদেশমন্ত্রী ছিলেন যশবন্ত। ভারতের উপর সেইসময় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জেরে অনেকেই যশবন্ত সিংয়ের ব্যর্থতাকে অন্যতম কারণ হিসাবে দেখিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে নিজের লেখা বই 'জিন্না- ভারত, দেশভাগ, স্বাধীনতা'তে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আলি জিন্নার প্রশংসা করায় দলের বিরাগভাজন হয়েছিলেন যশবন্ত। সেইসময় দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করে বিজেপি। তবে ২০১০ সালে ফের তাঁকে ফিরিয়ে নেয় দল। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে পার্টির টিকিট না পেয়ে দুঃখ পেয়েছিলেন যশবন্ত। সেইসময় নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় তাঁর। তার কয়েক মাস পরেই বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর চোট পান তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কোমায় চলে যান যশবন্ত। তারপর আর কোমা থেকে ফিরে আসেননি তিনি।
Read the full article in ENGLISH
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন