গতকালই বলেছিলেন, ইস্তফা দেবেন। সেই কথা রাখলেন কর্ণাটকের গ্রামোন্নয়ন এবং পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী কে এস ঈশ্বরাপ্পা। ঠিকাদারকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁর নামে মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে শেষপর্যন্ত ইস্তফা দিয়ে দিলেন ঈশ্বরাপ্পা। শুক্রবার সন্ধেয় মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন মন্ত্রী।
ইস্তফা দেওয়ার কারণ হিসাবে তিনি বলেছেন, "আর নিজের দল বিজেপিকে অস্বস্তিতে রাখতে চাই না।" কর্ণাটকের গ্রামোন্নয়ন এবং পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এফআইআরে তাঁর এবং আরও দুজনের নাম ছিল। সন্তোষ পাটিল নামে এক ঠিকাদারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় গত মঙ্গলবার। উদুপির একটি হোটেল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তিনি এর আগে ৪০ শতাংশ কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ করেন। নাহলে সরকারি প্রকল্পের ৪ কোটি টাকা আটকে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই নিশ্চিত করেছিলেন ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন। তখনই মন্ত্রীকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে পরিষ্কার জানিয়ে দেন মন্ত্রী, যে তিনি কোনওমতেই ইস্তফা দেবেন না। কারণ তিনি সন্তোষকে চেনেন না, আর এমন অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।
আরও পড়ুন ঘরে-বাইরে প্রবল চাপ, শেষপর্যন্ত ইস্তফাই দিচ্ছেন কর্ণাটকের মন্ত্রী
এদিন শিবামোগা থেকে নিজের অনুগামীদের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে আসেন ঈশ্বরাপ্পা। তিনি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী তদন্তের নির্দেশ দিলে তিনি নির্দোষই প্রমাণিত হবেন। কারণ ঠিকাদারের মৃত্যুতে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। কংগ্রেস লাগাতার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল মন্ত্রীর ইস্তফা এবং গ্রেফতারির দাবিতে। তার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করে বলেন, "কংগ্রেস নেতাদের তদন্তকারী অফিসার হতে হবে না। নিরপেক্ষ তদন্ত হোক, তাহলেই পরিষ্কার হবে কে দোষী।"
উল্লেখ্য, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে সরানোর পিছনে ঈশ্বরাপ্পার হাত ছিল বলে মনে করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধের জেরে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করেছিলেন ঈশ্বরাপ্পা। তাই নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের শেষে কয়েক মাস পর ইস্তফা দেন ইয়েদুরাপ্পা। আবার কয়েক মাস পরে নয়া মুখ্যমন্ত্রীর চাপে সরে দাঁড়াতে হল ঈশ্বরাপ্পাকেই। একেই বলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।