মুসলিম পড়ুয়ারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব ছাড়া ঢুকতেই রাজি হচ্ছেন না। শুধুমাত্র এই কারণে পরীক্ষা দিতে এসেও ফিরে যাচ্ছেন। যাতে মুখ পুড়ছে কর্নাটক সরকারের। বাধ্য হয়ে মুখ বাঁচাতে হিজাব ইস্যুতে মুসলিম জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হলেন কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ। তাঁদের অনুরোধ করলেন, মুসলিম ছাত্রীরা যাতে বিনা হিজাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসেন, সেই ব্যাপারে তাঁদের রাজি করাতে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি কর্নাটক হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, হিজাব মামলা চলাকালীন, ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা যাবে না। আদালতের এই নির্দেশ মানতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশি পাহারা বসিয়েছে কর্নাটক সরকার।
কিন্তু, তারপরও কিছু মুসলিম ছাত্রী হিজাব এবং বোরখা পরেই বুধবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। যার জেরে কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যাপক ডামাডোলের সৃষ্টি হয়। পুলিশের সঙ্গে মুসলিম পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একাংশের বাদানুবাদ তুঙ্গে ওঠে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বুধবার এর জেরে ছুটি করে দিতে হয়।
এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি থেকে বের হতেই বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুসলিম জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ। তিনি মুসলিম জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করেন, তাঁরা যেন মুসলিম ছাত্রীদের আদালতের নির্দেশ মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার ব্যাপারে সহায়তা করেন।
নাগেশ নিজে অবশ্য এই বৈঠককে স্রেফ 'শুভেচ্ছা বৈঠক' বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, 'ইউনিফর্ম নীতি বদলের দরকার আছে। বর্তমানে এনিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। আমরা আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করব। আর, তা মেনেই নতুন ইউনিফর্ম নীতি তৈরি হবে।'
আরও পড়ুন- মিথ্যে বলছে রাশিয়া, যা-ই করবে তার জবাব পাবে, চরম হুঁশিয়ারি ন্যাটো-আমেরিকার
এর আগে, হিজাব বিতর্কের জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ৯ ফেব্রুয়ারি বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। সোমবার ফের চালু হয় স্কুল। বুধবার চালু করা হয় কলেজগুলো। আর, তারপরই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
এই অবস্থায় কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশের সুরেই জানিয়েছেন, তাঁর সরকার আদালতের নির্দেশ মেনে চলবে। এনিয়ে কর্নাটক কংগ্রেসের নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বিধানসভায় বোম্মাইকে চেপে ধরেন। বেকায়দায় পড়ে কর্নাটকের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাই হিজাব ইস্যু আদালতের কোর্টে ঠেলে দেন। তিনি জানান, স্কুল থেকে কলেজ এমনকী বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বত্রই আদালতের নির্দেশ মেনে চলবে তাঁর সরকার।
Read story in English