সিবিআই জেরার মুখোমুখি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ছেলে সাংসদ কার্তি। ইতিমধ্যেই তাঁর অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বাজেয়াপ্ত করেছে বেশ কিছু নথি। যার বিরুদ্ধে শুক্রবার লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছেন সাংসদ কার্তি চিদাম্বরম। চিঠিতে উল্লেখ যে, সাংসদের বাসভবনে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) দ্বারা পরিচালিত সাম্প্রতিক তল্লাশির সময় তাঁর সংসদীয় বিশেষাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
কার্তি চিদাম্বর চিঠিতে লিখেছেন যে, 'সিবিআই-এর কিছু অফিসার আমার অত্যন্ত গোপনীয় এবং সংবেদনশীল ব্যক্তিগত নোট এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়। এটা আইন লংঘনের শামিল।' তথ্য ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কার্তি চিদাম্বরম। তিনি আরও জানান যে, জাতীয় নিরাপ্তার খাতিয়ে বাজেয়াপ্ত নথিগুলি ইন্য কারর হাতে যাওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। সাংসদের অভিযোগ, সংসদীয় কমিটিকে নিজের হাতে লিখে তিনি নিজে যেসব তথ্য দিয়েছেন, সেগুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যা নিয়ম বিরুদ্ধ বলে দাবি কার্তির।
সাংসদ অধ্যক্ষকে লেখা চিঠিতে বলেছেন যে, 'স্যার, সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপগুলি সংসদ সদস্য হিসাবে আমার দায়িত্বে হস্তক্ষেপের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের সংসদ যে গণতান্ত্রিক নীতির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের পদক্ষেপ সংসেদর স্বাধীনতা ও বিশেষাধিকারের উপর সরাসরি আক্রমণের সমান।'
সিবিআই ১৭ মে ভিসা দুর্নীতির মামলায় কার্তি এবং তাঁর বাবার পি চিদাম্বরমের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন দেশব্যাপী অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল। কার্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ যে, তিনি একটি চিনা কোম্পানির থেকে 50 লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ওই কোম্পানির ৩০০ জন চিনা নাগরিকের ভিসা সহজে করে দেওয়ার জন্য ওই বিদেশি সংস্থা কার্তির একটি কোম্পানির অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। বুধবার, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও কার্তির বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ মামলা দায়ের করেছে। ইতিমধ্যেই এই মামলায় কার্তির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী এস ভাস্কররামনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কার্তি লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে লেখা তার চিঠিতে জানিয়েছেন যে, 'গত কয়েক বছর ধরে, আমার পরিবার এবং আমি বর্তমান সরকার ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির নিশানায় পরিণত হয়েছি। এইভাবেই ভিন্নমতের কণ্ঠকে নীরব করার চেষ্টা চলছে। একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে। সংসদের একজন সদস্যকে ক্রমাগত নিশানা করে ভয় দেখানো আদতে সংসদের বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের সমান'
তিনি ও তাঁর বাবা পি চিদাম্বরমকে 'গুরুতর বেআইনি এবং স্পষ্টত অসাংবিধানিক পদক্ষেপের শিকার' বলে অভিহিত করেছেন সাংসদ কার্তি। লোকসভার অধ্যক্ষকে বিষয়টির অবিলম্বে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেছেন কংগ্রেসের এই সাংসদ।
বেআইনি ভিসা মামলায় বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন কার্তি। তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কার্তি এবং মামলাটিকে 'ভুয়ো' বলে দাবি করেছেন।
Read in English