আবগারি দুর্নীতির অভিযোগের পর বোমা ফাটিয়েছেন মণীশ সিসোদিয়া। বিজেপির বিরুদ্ধে দিল্লিতে 'অপরেশন লোটাস'-এর ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি। আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে আপ বিধায়কদের ভাঙানোর চেষ্টা গেরুয়া শিবিরের তরফে করা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। যা ঘিরে রাজধানীর রাজনীতি তোলপাড় হয়। এরপরই বিধায়কদের মন বুঝতে বৃহস্পতিবার নিজের বাসভবনে বৈঠকের ডাক দেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যাকে কেন্দ্র করে কিছুটা মাথাব্যথা বেড়েছে দিল্লির শাসক দলের। বৈঠকের খবর বেশ কয়েকজন বিধায়কের কাছে পৌঁছান যায়নি। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না।
মোট সাতজন বিধায়ক এ দিনের বৈঠকে ছিলেন না। এই অবস্থায় এ দিন কেজরিওয়ালের বাসভবনে আপ বিধায়কদের বৈঠক হয়েছে। ৬২ জন দলীয় বিধায়ক হাজির হননি। তাঁরা কেন গড়হাজির সে নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি। পরে দলের তরফে জানানো হয়েছে, মণীশ সিসোদিয়া এবং বিধানসভার স্পিকার রাম নিবাস গোয়েল শহরে না থাকায় উপস্থিত হননি। সত্যেন্দ্র জৈন আর্থিক তছরুপের অভিযোগে জেলে, আমানতুল্লা খান যানজটের কারণে বৈঠকে পৌঁছাতে পারেননি তবে ভিডিও কলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে এই না আসাকে কেন্দ্র করে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈঠকে ১২ জন আপ বিধায়ক দাবি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে বিজেপির প্রতিনিধিরা যোগাযোগ করেছিলেন। দল ছেড়ে বেরিয়ে যেতেই আর্জি জানানো হয়েছিল। আপ বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ বলেছেন, 'সব বিধায়ক বলেছেন যে তাঁরা শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দলের সঙ্গে থাকবেন। দলের প্রতি তাঁরা দায়বদ্ধ। ফলে দিল্লির রাজ্য সরকার নিয়ে কোনও আশঙ্কা নেই। বিজেপি আপের ৪০ জন বিধায়ককে কিনতে চেয়েছিল। প্রত্যেককে ২০ কোটি করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।' এরপরই, তিনি বলেন, 'কথা থেকে বিজেপি ৮০০ কোটি পাচ্ছে? এগুলো কালো টাকা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কী এর তদন্ত করবে?'
এর আগে বুধবার আপের তরফে বলা হয়েছিল যে, 'চারজন বিধায়ক - সোমনাথ ভারতী, সঞ্জীব ঝা, কুলদীপ কুমার এবং অজয় দত্তের সঙ্গে বিজেপি যোগাযোগ করেছিল। তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার জন্য ২০ কোটি টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিধায়করা আরও দাবি করেছেন যে তাঁদের সঙ্গে অন্য বিধায়কদের আনতে পারলে ২৫ কোটি করে দেওয়া হবে।'
বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও আপ বিধায়করা রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর শরনাপন্ন হন। শতচেষ্টা সত্ত্বেও দিল্লিতে 'অপরেশন লোটাস' ব্যর্থ হওয়ার জন্য গান্ধীজির কাছে প্রার্থনা করেন তাঁরা।
ইতিমধ্যে, বিজেপি অভিযোগগুলি অস্বীকার করেছে এবং প্রমাণ চেয়েছে যে বিজেপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আপ বিধায়কদের যোগাযোগের প্রমাণ দাবি করেছে। 'সঠিক সময়ে' প্রমাণ মিলবে বলে পাল্টা জানিয়েছে আপ।
আম আদমি পার্টি ২০১৫ ও ২০ সালে বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লিতে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। ২০১৫ সালে আপের ৬৭ জন বিধায়ক ছিল। ২০২০-তে কমে হয়েছে ৬২।