পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের চার হেভিওয়েট নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। যা ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই তেতে রয়েছে ত্রিপুরার রাজনীতি। এরই মধ্যে সেরাজ্যে গেরুয়া শিবিরের অভ্যন্তরীণ বিবাদকে প্রকাশ্যে এনে তা আরও উস্কে দেওয়ায় সচেষ্ট বঙ্গ তৃণমূলের সাধারাণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব গোষ্ঠীর সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সুদীপ বর্মণ শিবিরের কোন্দলে ত্রিপুররা বিজেপি "বেসামাল" বলে টুইটে উল্লেখ করেছেন এই তৃণমূল নেতা।
বুধবার টুইটে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, "তৃণমূলের ধাক্কায় বেসামাল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে দিল্লির তলব। ওদিকে সুদীপ বর্মণ গোষ্ঠী বলছে তিনি নাকি বড় ক্ষমতায় আসছেন। জিতবেন কে? ঘর সামলাক বিজেপি। তাসের ঘরের মত ভাঙবে। সন্ত্রাস আর মিথ্যে মামলা দিয়ে এবার তৃণমূলকে ঠেকানো যাবে না।" সূত্রের খবর, ত্রিপুরায় প্রতাপ দেখাচ্ছে তৃণমূল। ফলে প্রশ্ন উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্ব নিয়ে। যা নিয়েই বিপ্লব দেব-কে বুধবার তলব করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করছে বিজেপিপ বিপ্লব বিরোধী গোষ্ঠী।
বিপ্লব-সুদীপ দ্বন্দ্ব বিজেপির কারোর অজানা নয়। গত বছর অক্টোবরেই ত্রিপুরার পদ্ম শিবিরেরে এই দুই হেভিওয়েটের কোন্দল চরমে পৌঁছায়। বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে দুর্বল প্রশাসন ও স্বৈরাচারিতার কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তুলে ধরেছিলেন সুদীপ বর্মণ। মুখ্যমন্ত্রীর উল্টোপাল্টা মন্তব্যেই ত্রিপুরায় বিজেপির জনপ্রিয়তা কমছে বলে জেপি নাড্ডার কাছে অভিযোগ করেছিলেন সুদীপবাবু। যাকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরার বিজেপি উত্তাল হয়েছিল। অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকী বিজেপি ত্রিপুরায় ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়েও জল্পনা বাঁধে। কিন্তু শাহ-নাড্ডাদের হস্তক্ষেপে সেযাত্রায় বেঁচে যায় ত্রিপুরার বিজেপি সরকার।
তবে, উত্তর পূর্বের বাঙালি রাজ্যে এই দুই নেতাকে ঘিরে বিজেপির কোন্দল মাঝে মধ্যেই প্রকাশ্যে এসে পড়ে। সাম্প্রতিককালে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা পরিষদীয় দলের বৈঠকে আসেননি মন্ত্রী সুদীপ বর্মণ। ৩৬ জন বিধায়কের মধ্যে গরহাজির ছিলেন ১০ জন। আসেননি সুদীপ রায় বর্মন এবং তাঁর শিবিরের অনেকেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুদীপ বর্মণ পদে পদে বুঝিয়ে দিচ্ছেন বিপ্লব দেবের উপর তাঁর এতটুকুও আস্থা নেই। সূত্রের খবর, গত জুন মাসে আসাম সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাছে সুদীপ নিজের বিপ্লব বিরোধী মনোভাব জানিয়েছেন। এগিন আবার কুণাল ঘোষের পোস্টে উল্লেখ, "সুদীপ বর্মণ গোষ্ঠী বলছে তিনি নাকি বড় ক্ষমতায় আসছেন।" এর সঙ্গে কি তাহলে বিপ্লব দেবের দিল্লি যাওয়ার কোনও সম্পর্ক রয়েছে, প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে।
২০২৩-কে পাখির চোখ করেছে জোড়া-ফুল শিবির। ত্রিপুরায় সংগঠন বিস্তারে মরিয়া এ রাজ্যের শাসক শিবির। বাংলায় ভোটে বিজেপি ধরাশায়ী হতেই মুকুল রায় দলত্যাগ করে ফের তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সুদীপ বর্মণ আবার মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ। এর আগেই মুকুলের তত্ত্বাবধানেই ত্রিপুরায় তৃণমূলের কাণ্ডারী ছিলেন কংগ্রেস ত্যাগী সুদীপ। এই প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষের এদিনের টুইট যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন