রাজ্যসভা নির্বাচনই হোক বা আস্থাভোট, নির্বাচন আসলেই দলের বিধায়কদের রিসর্টবন্দি করার রেওয়াজ নতুন কিছু না। এই রেওয়াজ গত চার দশকের। পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত নয়। কিন্তু, পরিসংখ্যানই বলে দেবে, কীভাবে বছরের পর বছর এই রাজনীতি চলেছে। কীভাবেই বা রিসর্টের রাজনীতিতে ভরসা রেখেছে দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ কিংবা পশ্চিমের রাজ্যগুলো।
রাজ্যসভা নির্বাচনের আর সপ্তাহখানেক বাকি। দলের প্রায় ৭০ জন বিধায়ককে ইতিমধ্যেই উদয়পুরের রিসর্টে বন্দি করেছে কংগ্রেস। রাজধানী জয়পুর থেকে যার দূরত্ব প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। হরিয়ানায় আবার দলের বিধায়কদের ছত্তিশগড়ে সরিয়েছে কংগ্রেস। কারণ, ছত্তিশগড় কংগ্রেসশাসিত রাজ্য। আর, হরিয়ানা বিজেপির। হরিয়ানার রাজধানী চণ্ডীগড় থেকে ছত্তিশগড়ের দূরত্ব ১,৪৭০ কিলোমিটার। তা সে যত দূরই হোক না-কেন, যাতায়াতে খরচ যতই বাড়ুক না-কেন, নজরদারিটাই আসল। এ যেন এক ধারাবাহিক ইতিহাস। অতীতের দিকে তাকালেই তা বোঝা যায়। যেমন,
আরও পড়ুন- ফের ঘোড়া কেনাবেচা! রাজ্যসভার আগে দলের সঙ্গে দূরত্ব মন্ত্রী-সহ বিধায়কদের
গোয়া, উত্তরাখণ্ড (মার্চ, ২০২২)
গত বিধানসভা নির্বাচনে গোয়া আর উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেস এবং বিজেপি সমানে সমানে টক্কর দিয়েছে। কংগ্রেস তার প্রার্থীদের নির্বাচনের ঠিক পরেই উত্তর গোয়ার রিসর্টে সরিয়ে নিয়েছিল। দলের দাবি ছিল, বেশ কয়েকজন নেতার জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান আছে। তাই সরানো হয়েছে। একই জিনিস দেখা গেছে উত্তরাখণ্ডেও। সেখানে কংগ্রেসের প্রার্থীদের কর্নাটকে সরানো হয়েছিল। দায়িত্বে ছিলেন দলের পুরোনো এবং বিশ্বস্ত ভরসা ডিকে শিবকুমার।
রাজস্থান, (জুন, ২০২০)
দু'বছর আগে রাজ্যসভা নির্বাচনের সময় বিধায়কদের বাঁচাতে কংগ্রেস তাঁদের জয়পুরের রিসর্টে রেখেছিল। কংগ্রেস বিধায়কদের সেখানে যোগাসন করানো হয়েছিল। দেখানো হয়েছিল মহাত্মা গান্ধীর ওপর তৈরি সিনেমা। এটা যে শুধু কংগ্রেসের সংস্কৃতি, তা কিন্তু না। বিরোধী দল বিজেপিও তাদের বিধায়কদের রিসর্টে নিয়ে তুলেছিল। ঠিক রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে। গেরুয়া শিবিরের আবার দাবি ছিল, বিধায়কদের আইনি এবং অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
সেই বছরের জুলাইয়েই কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট। তাঁর সঙ্গে বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন ১৮ জন কংগ্রেস বিধায়ক। বাকি বিধায়কদের বাঁচাতে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট তাঁদের নিয়ে তুলেছিলেন ফেয়ারমন্ট হোটেলে। পাইলট আবার অনুগামীদের নিয়ে সোজা চলে গিয়েছিলেন বিজেপিশাসিত হরিয়ানায়। সেই সময় রটেছিল, পাইলট বিজেপির দরজা ধাক্কাচ্ছেন। এগুলো টুকরো উদাহরণ। তালিকাটা এভাবেই যেন বড় হয়ে ছেয়ে রয়েছে গত চার দশকের জাতীয় রাজনীতিতে।
Read full story in English