সামনেই বৃহন্মুম্বই কর্পোরেশনের নির্বাচন। তাকে সামনে রেখে এখন মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মরাঠি অস্মিতার প্রতিনিধিত্ব করার লড়াই তুঙ্গে উঠেছে। মারাঠা এবং মরাঠির যেখানে প্রশ্ন, সেখানে কি আর শিবাজি, শম্ভুজি আর মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব না-থেকে পারেন? তাই ইতিহাস থেকে মঞ্চে যখন খুশি তাঁদের টেনে এনে জনমানসে নিজেদের ভাবমূর্তি বাড়়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।
আর, সেসব ঘিরে ক্ষণেক্ষণে বিতর্ক। তার সাম্প্রতিকতমটি হল, বিতর্কিত এআইএমআইএম নেতা আকবরুদ্দিন ওয়াইসির ঔরঙ্গাবাদে ঔরঙ্গজেবের কবরস্থান সফর। উলটোদিকে বিজেপি এবং এমএনএস হিন্দুত্ববাদের পালে হাওয়া দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। শিবসেনার অতীত যাই হোক, কংগ্রেস এবং এনসিপির সঙ্গে তাদের জোট সরকার। তাই হিন্দুত্বের তীব্রতায় তারা গা ভাসাতে নারাজ। তারা নিজেদের হিন্দু এবং মুসলিম, উভয় সম্প্রদায়েরই কাছের বলে প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তার মধ্যে এআইএমআইএম মুসলিম ভোট কাটার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাতে বিচলিত না-হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে শিবসেনা আপাতত হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়েরই প্রাণভোমরা হতে চাইছে। মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ঔরঙ্গজেবের কবর এবং ঔরঙ্গাবাদের একটা বড় ভূমিকা আছে। ঔরঙ্গাবাদ শহরটি নিজাম শাহি রাজবংশের শাসক মালিক অম্বর তৈরি করেছিলেন। মারাঠাদের পর্যুদস্ত করতে ১৬১০ সালে ঔরঙ্গজেব এখানেই তাঁর রাজধানী স্থানান্তর করেন। তিনি এই জায়গার নাম বদলে করেন ঔরঙ্গাবাদ।
আরও পড়ুন- দশম শ্রেণির ছাত্রীকে চরম অপমান মৌলবির, তবুও পেলেন সমর্থন
১৯৮০-র দশকের শেষের দিকে, ঔরঙ্গাবাদ মুম্বই-থানে বেল্টের বাইরে প্রথম এবং প্রধান শহরগুলোর একটি হয়ে উঠেছিল। এই শহরের দিকে শিবসেনার বিশেষ নজর ছিল। শহরের ৩০ শতাংশ জনসংখ্যা মুসলিম। এখানে দাঙ্গা হয়েছিল। তাতে ২৫ জনেরও বেশি মারা যান। ১৯৮৮ সালে ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল শিবসেনা। সেই সময় শিবসেনা সুপ্রিমো বালাসাহেব ঠাকরে ঔরঙ্গাবাদের নাম বদলে শম্ভাজি নগর করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কারণ, শিবাজির পুত্র শম্ভাজি নিহত হয়েছিলেন ঔরঙ্গজেবের আক্রমণে। ১৯৫৫ সালে কর্পোরেশন সেই নাম গ্রহণও করে। তারপর বিষয়টি আজও চলছে। ফের সামনেই আরও একটা বিএমসি নির্বাচন। ফের সেই নামবদল থেকে শিবাজি, ঔরঙ্গজেবরা প্রতিদিনই ঘুরে ফিরে আসছেন মঞ্চে আসা নেতাদের বক্তব্যে।
Read full story in English