স্থিতিশীল মুখ্যমন্ত্রী। তবে বাঁ পায়ের গোড়ালিতে চিড় আছে, সেখানে ব্যথা। আর রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কম। নয় সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। কবে তাঁকে ছাড়া হবে সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিন দুপুরের মেডিক্যাল বুলেটিনে এমনটাই জানিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল। বুলেটিনে বনি ইনজুরি অর্থাৎ হাড়ে আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে। মানব শরীরের গোড়ালিতে যে পাঁচটি হাড় থাকে, তার মধ্যে একটায় চিড় দেখা গিয়েছে। আজ আরও একবার এক্স-রে ও সিটি স্ক্যান হবে মুখ্যমন্ত্রীর। এমনটাই উল্লেখ বুলেটিনে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ৯ সদস্যের দলে এসএসকেএমের অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও তিন বিভাগীয় প্রধান ও আরও পাঁচ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডে। রাখা হয়েছে অর্থোপেডিক, নিউরো সার্জারি, নিউরো মেডিসিন, জেনারেল সার্জারি, কার্ডিওলজি, এন্ডোক্রিনোলজি, জেনারেল মেডিসিন এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞদের।
বুধরাত রাতেই জানা যায় যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের পাতায় চিড় ধরেছে। লিগামেন্ট, টিস্যুতেও চোট লেগেছে। এই ধরনের চোট-আঘাতে সাধারণত ৬-৮ সপ্তাহ বিশ্রামে থাকার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভিভিআইপিদের জন্য বরাদ্দ এসএসকেএম-এর সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।
অপরদিকে, বাঁ পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতার হাড়ে চিড় ধরেছে। ওই পায়ের পেশিতেও চোট লেগেছে। পায়ে টেম্পোরারি প্লাস্টার নিয়েই শুয়ে রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ছবি সোশাল মাধ্যমে পোস্ট করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
হাসপাতালে পায়ে প্লাস্টার নিয়ে মমতার অবসন্নতার সেই ছবি দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারির সুরে লেখেন, “বিজেপি তৈরি থাকুক। রবিবার ২ মে মানুষের শক্তি দেখার জন্য নিজেদেরকে এখন থেকেই তৈরি করুক। প্রস্তুত হোক সকলে।” পাশাপাশি, নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আক্রান্ত’ হওয়ার ঘটনাকে ‘নাটক’ আখ্যা দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপত্রি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মানুষ এসব নাটক দেখে অভ্যস্ত। তবে নাটকের এই সবে শুরু। এর পর আরও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটানো হতে পারে ভোটের মুখে।”
বুধবার রাতে আহত হওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন তাঁকে চার-পাঁচ জন ব্যক্তি মিলে ধাক্কা দেয়। এর নেপথ্যে বিজেপির চক্রান্ত এমনটাও অভিযোগ করা হয়। দিলীপের বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী আহত হয়েছেন। ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। জেড প্লাস নিরাপত্তা থাকলেও কী করে মুখ্যমন্ত্রীকে কেউ ধাক্কা দিল? এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। রাজ্য পুলিশ কি অকর্মণ্য হয়ে গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমেও কিন্তু কোনও ছবি নেই।”
গোটা ঘটনাটিকে ‘নাটক’ হিসেবে বর্ণনা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “আমি যতটুকু শুনেছি ওঁর গাড়ির ড্রাইভার রাস্তার পাশে একটি খুঁটিতে ধাক্কা মেরেছে। তখনই ওঁর পায়ে লাগে।” পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন, তদন্তের আগেই ঘটনাকে কী করে ষড়যন্ত্র বলে দাগিয়ে দেওয়া যায় তা নিয়েও।