পঞ্জাব এবং পাঞ্জাবিদের কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের দুদিন আগে পঞ্জাববাসীকে বিশেষ বার্তা দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। বৃহস্পতিবার তিনি বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে সাবধান করে বললেন, ভেবেচিন্তে ভোট দিতে।
Advertisment
পঞ্জাবি ভাষায় এদিন ভিডিও বার্তায় মনমোহন বলেন, "কেন্দ্র পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি এবং রাজ্যকে অসম্মান করছে প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার নামে, এটা চলতে পারে না। ঠিক যেরকম কৃষক আন্দোলনের সময় পঞ্জাব এবং পঞ্জাবিদের কলঙ্কিত করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে সেটা বলা হচ্ছে না, যে তাঁরা গোটা বিশ্বে তাঁদের সাহস এবং দেশপ্রেমের জন্য কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছে। একজন প্রকৃত ভারতীয় হিসাবে পঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করার পর এখন যা হচ্ছে তা দেখে আমি ব্যথিত।"
তিনি বিজেপিকে তুলোধনা করে বলেছেন, "এখনও ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহেরুকে দোষ দিয়ে যাচ্ছেন মোদী। বিজেপি বার বার নেহেরুকে আক্রমণ করে যাচ্ছে। অর্থনীতি নিয়ে বা অন্য কিছুতে, প্রধানমন্ত্রীর কাজ কথা বলবে। নিজের কথা কম বলে তাঁর কাজ নিয়ে কথা বলুন।"
Advertisment
মনমোহন বলেছেন, "বর্তমান শাসক নিজেদের ভুল সংশোধন করার বদলে সাড়ে সাত বছর শাসনের পরও মানুষের সমস্যার জন্য তারা প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকে দোষারোপ করে যান। একদনের দোষ ঢাকতে কখনও দেশ এবং তাঁর ইতিহাসকে দায়ী করতে পারে না কেউ। আমি দশ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজ করার পর আমি মনে করি আমার কাজ কথা বলবে। আমি নিজের কথা বলব না। আমরা রাজনৈতিক ফায়দার জন্য দেশের বিভাজন করি না। আমরা সত্যকে চাপা দিই না। এর এমন কোনও কাজ করি না যাতে প্রধানমন্ত্রী পদের গরিমা নষ্ট হোক।"
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "সমস্যার সম্মুখীন হয়েও আন্তর্জাতিক স্তরে দেশ এবং দেশবাসীকে গৌরবান্বিত করেছি। আমি খুশি যে বিজেপি এবং তাদের বি-সি টিম আমার বিরুদ্ধে রয়েছে তা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। ২০০৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত যা ভাল কাজ হয়েছে মানুষ তা মনে রেখেছে।"
অর্থনীতি নিয়ে তাঁর বক্তব্য, "সরকার অর্থনীতি বোঝে না। তাদের ভুল অর্থনৈতিক পলিসির জন্য বেকারত্ব শিখরে পৌঁছেছে। কৃষক থেকে শিল্পপতি, মহিলা, ছাত্র-ছাত্রী সবাই সমস্যায় পড়েছেন। অন্নদাতারা আমাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না। ধনী আরও ধনী হচ্ছে। এই সরকারের চেষ্টা এবং নীতি দুটোতেই সমস্যা আছে। স্বার্থের জেরে নীতি গৃহীত হচ্ছে, এবং তাতে ঘৃণা মিশ্রিত হচ্ছে। এই নীতি মানুষকে জাতি, ধর্ম, বর্ণে ভাগ করছে। তাদের ভুয়ো দেশপ্রেমের কোনও ভিত্তি নেই, সেটা ভয়ঙ্করও বটে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করা হচ্ছে।"
বিদেশ নীতি নিয়ে তাঁর আক্রমণ, "চিন বার বার আমাদের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করছে গত এক বছর ধরে। কিন্তু সেটা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। পুরনো বন্ধু আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।" যদিও তিনি তাঁর বক্তব্যে কোথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম নেননি। তবে নাম না করেই কটাক্ষ করে তিনি মোদীর ২০১৫ সালের পাকিস্তান সফর নিয়ে বলেছেন, "আমি আশা করি শাসকদলের নেতা এটা বুঝতে পেরেছেন রাজনীতিবিদদের আলিঙ্গন করলেই সম্পর্ক ঠিক হয় না। বা বিনা নিমন্ত্রণে বিরিয়ানি খেতে চলে গেলেও না।"