পরিবারের লোকজনদের বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং সন্তানদের শিক্ষার জন্য বহু টাকা খরচ করেছেন শীর্ষ মাওবাদী নেতারা। এ তথ্য দিচ্ছে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
অর্থের এই জোগান বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। মন্ত্রকের তরফ থেকে গোয়েন্দা দফতর ও কর বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে একটি মাল্টি ডিসিপ্লিনারি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে।
কোন কোন নেতা পরিবার ও সন্তানদের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করেছেন তার একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে-
সিপিআই মাওবাদী দলের বিহার ঝাড়খণ্ড স্পেশাল এরিয়া কমিটির সদস্য প্রদ্যুম্ন শর্মা ২০১৭ সালে তাঁর এক আত্মীয়ের প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে পড়ার খরচের জন্য ২২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন বলে অভিযোগ।
বিহার ঝাড়খণ্ডের সিপিআই মাওবাদী দলের নেতা সন্দীপ যাদব নোটবাতিলের সময়ে ১৫ লক্ষ টাকা নোট বদল করেছিলেন।
ঝাড়খণ্ডের নকশালপন্থী নেতা অরবিন্দ যাদব একটি প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তাঁর ভাইয়ের পড়ার জন্য ১২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিক অভিযোগ করেছেন, ‘‘এইসব নেতাদের পরিবারের লোকজন বিলাসী জীবন যাপন করে, এদের ছেলেমেয়েরা সবচেয়ে ভাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশুনোর সুযোগ পায়, আর বিপথচালিত সাধারণ কর্মীরা মতাদর্শের জন্য জঙ্গলে জীবন কাটায়।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘এই সব নেতারা, যারা অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের জোর করে দলে ঢোকায় এবং সমস্ত ধরনের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা দেয়, তাদের আসল মুখ বেরিয়ে পড়েছে।’’
সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে বিবৃতি জারি করেছে, তাতে বলা হয়েছে ‘‘দেশের চরমপন্থী বাম আন্দোলনে টাকার জোগান আসছে একাধিক বেআইনি উৎস থেকে। বেআইনি ভাবে লেভি সংগ্রহ করা হচ্ছে সরকারি কর্মচারী, খাদানের কনট্র্যাক্টর, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। টাকা আসছে বেআইনি পাথর পেষাই ও নকশালপন্থী মতাদর্শের কাগজপত্র বিলির মাধ্যমেও।’’
মাল্টিটাস্কিং যে গ্রুপ এ বিষয়ক তদন্তের জন্য তৈরি করা হয়েছে, তাতে ইন্টালিজেন্স ব্যুরো, সিবিআই, ইডি, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস ও রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকরা রয়েছেন। এই গ্রুপের শীর্ষে থাকবেন কেন্দ্রের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের একজন জয়েন্ট ডিরেক্টর।
এনআইএ-র মধ্যেই মাওবাদীদের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলিতে নজর দেওয়ার জন্য একটি পৃথক দল গঠনের পদ্ধতি শুরু হয়েছে। গতমাসেই মাওবাদী মানচিত্র নতুন করে সাজিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নতুন মানচিত্রে ৪৪টি জেলা বাদ দেওয়া হয়েছে, অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৮ টি নতুন জেলা। আগের মানচিত্র অনুযায় দেশে মাওবাদী অধ্যুষিত জেলার সংখা ছিল ১২৬। তা নতুন ম্যাপে কমে দাঁড়িয়েছে ৯০-এ।