Advertisment

আত্মনির্ভর ভারত, সবকা সাথ সবকা বিকাশের মন্ত্র আউড়ানো মোদীর বক্তব্যে ঘুরে ফিরে ২০২৪

বক্তব্যে নাম না-করে বারাণসীর প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলকেও খোঁচা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
BJP assures security and development of Punjab, says PM Narendra Modi

ফাইল চিত্র।

বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের আগে তিনি ছুটে গিয়েছিলেন পঞ্জাবে। সেখান থেকে ফেরার পথে কৃষকরা তাঁর পথ আটকেছে বলে দাবি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তা নিয়ে জল অনেকদূর গড়িয়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়েও বারবার সেকথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদী। পঞ্জাববাসীকে বোঝাতে চেয়েছেন তিনি আছেন তাঁদের সঙ্গে। কৃষি থেকে নানা বিষয়ে পঞ্জাবের বাসিন্দাদের ভুল বোঝাচ্ছেন খালিস্তানিরা। সীমান্তবর্তী পঞ্জাবে খালিস্তান আন্দোলন যেমন প্রাসঙ্গিক। তেমনই প্রাসঙ্গিক শিখ রেজিমেন্ট। যেখানে পঞ্জাবের বহু গ্রাম থেকে প্রতিবছর ছেলেরা যোগ দেন।

Advertisment

এই দুইয়ের মধ্যে মোদী তাঁর ভোটপ্রচারে যেন সেনাবাহিনীর প্রতি পঞ্জাবের বাসিন্দাদের আবেগকে দিয়ে খালিস্তানের দাবিকে ধুইয়ে দিতে চেয়েছিলেন। পাশাপাশি, তাঁদের আক্রমণের নিশানায় টেনে পঞ্জাবের কৃষক আন্দোলনকে জুড়ে দিতে চেয়েছিলেন খালিস্তানের দাবির সঙ্গে। কিন্তু, পঞ্জাববাসী তাতে ভোলেনি। বরং, আম আদমি পার্টির হাতে তুলে দিয়েছে পঞ্জাবের ক্ষমতার দণ্ড। আর, সেটা যেন বৃহস্পতিবারের জয়ে তাঁর কাছে এক বড় ধাক্কা। কারণ, এই আম আদমি পার্টি এবং তার শীর্ষনেতা কেজরিওয়াল জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমশই যেন বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছেন। যে কেজরিওয়ালকে নির্বাচনী প্রচারে কার্যত সন্ত্রাসবাদীর তকমা লাগিয়ে দিতে বিজেপি কসুর করেনি, সেই কেজরির পার্টিই হেসেছে পঞ্জাবে। বৃহস্পতিবার তাই চার রাজ্যে গেরুয়া প্লাবনের পর দলের সদর কার্যালয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পঞ্জাব নিয়ে তাঁর অস্বস্তি স্পষ্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী। আশা প্রকাশ করেন, লোকসভা নির্বাচন পঞ্জাবে দলের এই বিপর্যয় পুষিয়ে দেবেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।

একইসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে বৃহস্পতিবার উঠে এল ইউক্রেন এবং করোনা প্রসঙ্গও। করোনা পরিস্থিতিতে জর্জরিত বিশ্বে যুদ্ধ একটা বিপর্যয়। যা সভ্যতা এবং উন্নয়নকে পিছিয়ে দেবে। সেকথা মাথায় রেখে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। একইসঙ্গে 'অপারেশন গঙ্গা'র মাধ্যমে ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়াদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এর পাশাপাশি, শান্তির দূত হিসেবে ইউক্রেনে আক্রান্ত মানুষকে নানাভাবে সাহায্য করছে বলেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছেন।

তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার এভাবে লাগাতার দেশের উন্নয়ন করার চেষ্টার পরও কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। যা দেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু, তাতে তাঁর সরকার থেমে থাকবে না। কারণ, এই সরকার আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলায় বিশ্বাসী বলেই প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, 'জাতপাতের রাজনীতির ক্ষতি মানুষ বুঝে গিয়েছেন। এই রাজনীতি থেকে কীভাবে দূরে থাকতে হয়, মানুষ সেটা জানেন। এবারের নির্বাচনে সেটা করে তাঁরা দেখিয়েও দিয়েছেন।'

ঘুরে ফিরে তাঁর বক্তব্যে বারেবারেই উঠে এসেছে লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলেন যে উত্তরপ্রদেশে যে ক্ষমতায় থাকবে, লোকসভা নির্বাচনেও সেই জিতবে। সেই কারণে, বিশেষজ্ঞদের এখন থেকেই বুঝে ফেলা উচিত যে ২০২২-এর উত্তরপ্রদেশের রায়ই ২০২৪-এ গোটা দেশে প্রতিফলিত হবে।

বক্তব্যে নাম না-করেও তিনি টেনে আনেন তৃণমূলের প্রসঙ্গ। নরেন্দ্র মোদী বলেন, দেশে দুর্নীতিবাজরা একজোট হচ্ছে। মাফিয়ারা নানা ইস্যুতে স্বার্থ চরিতার্থ না-হলেই কেন্দ্রের বিরোধিতা করছে। কিন্তু, বারাণসীর মানুষ এখন নরেন্দ্র মোদীকে তাঁদের ঘরের ছেলে করে নিয়েছে। কারণ, তাঁর লক্ষ্য 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস।' নিজের প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, তিনি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, সেই সময়ও তাঁর লক্ষ্য ছিল ভারতের বিকাশের জন্য গুজরাটের উন্নয়ন ঘটানো। এই জন্য যাতে এক মুহুর্তও নষ্ট না-হয়, সেই ব্যাপারে তিনি নজর দিয়েছেন।

আরও পড়ুন- কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সাফল্য পৌঁছচ্ছে সর্বস্তরে, তাতেই বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্য, দাবি মোদীর

সমস্যা যতই কঠিন হোক না- কেন, জয়ের সংকল্প যে তার চেয়েও বড়, বৃহস্পতিবার সেকথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদী। এই জয়ে ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা মিলল বলেই বৃহস্পতিবারের জয়কে তিনি অভিনন্দিত করেন। যে বিজেপি কর্মীরা এই নির্বাচনের জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের পাশাপাশি নির্বাচনে সাফল্যের জন্য মহিলাদেরও অভিনন্দন জানান মোদী। দাবি করেন, তাঁর সরকার কেন্দ্রে মহিলাদের জন্য নানা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আর, তাই মহিলারাও এখন বিজেপির সঙ্গী। বুঝিয়ে দেন, লোকসভা নির্বাচনেও এই মহিলা ভোটই হতে পারে তাঁর দলের তুরুপের তাস।

Modi Government
Advertisment