দলকে পোক্ত করতে নানা প্রস্তাব জমা হয়েছে। যার অন্যতম 'এক পরিবার-একটি টিকিট'। এই প্রস্তাব নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করছে হাইকম্যান্ড। শুরুতেই এই নীতি থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে গান্ধী পরিবারকে। অনেকেই বলছে, দলে পরিবারতন্ত্র বন্ধ করতে এই দাওয়াইয়ে সিলমোহর দিতে পারেন সনিয়া গান্ধী। জল্পনা চলছে, 'এক পরিবার-একটি টিকিট' নীতি কার্যকর হলে বিপাকে পড়তে হতে পারে একাধিক কংগ্রেস নেতৃত্বকে।
কিন্তু, সেই জল্পনায় ইতি। জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে হাইকম্যান্ড ঠিক করেছে আদৌ 'এক পরিবার-একটি টিকিট' প্রস্তাব কার্যকর হলে সেখানে পাঁচ বছরের একটি মানদণ্ড থাকবে। নেতৃত্বের মতে, একটি পরিবার থেকে প্রথমে একজনই টিকিট পাবেন। অন্য়দের টিকিট দেওয়ার হলে দেখতে হবে সে ন্যূনতম অন্তত পাঁচ বছর কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত কিনা। পাঁচ বছরের মানদণ্ড পূরণ হলেই কোনও পরিবার থেকে একাধিক ব্যক্তি দলীয় টিকিট পেতে পারেন। ফলে 'এক পরিবার-একটি টিকিট' নীতিতে কোনও সমস্যায় পড়বেন না বেশিরভাগ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতার উদাহরন দিলেই বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী এবং তাঁর ছেলে তথা দলের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী উভয়ই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। কী হবে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার? ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে ২০২৪ সালের ভোট লড়তে হলে পাঁচ বছর দলের হয়ে কাজ করার শর্ত পূরণ করে ফেলবেন তিনি।
রাহুল ২০০৪ সালে সরাসরি কংগ্রেসের হয়ে আমেঠি থেকে ভোটে লড়াই করেছিল। তার আদে দলের হয়ে প্রকাশ্যে কোনও দায়িত্ব নিয়ে তাঁকে দেখা যায়নি। এই নীতি তখন কার্যকর হলে রাহুল গান্ধীর ভোটে লড়াই করার বিষয়টি আটকে যেতে পারত।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে, দিগ্বিজয় সিং একজন রাজ্যসভার সাংসদ এবং তাঁর ছেলে জয়বর্ধন সিং মধ্যপ্রদেশের একজন বিধায়ক। এ কে অ্যান্টনির ছেলে অনিল কিছুদিন ধরে পার্টির কেরালা ইউনিটে ডিজিটাল বিভাগের হয়ে কাজ করছেন। মল্লিকার্জুন খার্গের ছেলে প্রিয়াঙ্ক খাড়গে একজন বিধায়ক এবং প্রাক্তন মন্ত্রী। হরিশ রাওয়াতের ছেলে আনন্দ রাওয়াত উত্তরাখণ্ড যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। পি চিদাম্বরমের ছেলে কার্তি চিদাম্বরম লোকসভার সাংসদ।
ছত্তিশগড়ের এআইসিসি ইনচার্জ, পি এল পুনিয়ার ছেলে তনুজ উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস মধ্যাঞ্চলের তফসিলি জাতি শাখার কার্যকরী সভাপতি হিসাবে সক্রিয়। তিনি ২০১৭, ২০২২ সালে র উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে এবং ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। প্রমোদ তেওয়ারীর মেয়ে আরাধনা মিশ্র দু'বারের বিধায়ক। সালমান খুরশিদ ও তার স্ত্রী লুইস খুরশিদ কয়েক দশক ধরে কংগ্রেসের হয়ে কাজ করছেন এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রাক্তন লোকসভা সাংসদ মীরা কুমারের ছেলে আনশুল অভিজিত ২০১৯-য়ের সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের মুখপাত্রের দায়িত্ব সামলেছেন।
হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডার ছেলে দীপেন্দর হুডা প্রায় দু'দশক ধরে কংগ্রেসী রাজনীতিতে যুক্ত। তিনি ২০০৫ সালে লোকসভার সাংসদ হন এবং বর্তমানে রাজ্যসভার সদস্য। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস প্রধান কমলনাথের ছেলে নকুল নাথ ইতিমধ্যেই লোকসভার সাংসদ। সুশীল কুমার শিন্ডের মেয়ে পরিণীতি ২০০৯ সাল থেকে বিধায়ক।
Read in English
আরও পড়ুন- ‘বিজেপির নিশানায় সংখ্যালঘুরা-মহামান্বিত মহাত্মার হত্যাকারী’, চিন্তন শিবিরে তুলোধনা সনিয়ার