মোদী জমানায় কাশ্মীরিয়ৎ খড়খড়ি বেয়ে ব্যালকনিতে লুটোচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে আজাদ কাশ্মীরের যে স্লোগান লালচকে পাথরবৃষ্টির সঙ্গে আছড়ে পড়ত, সেসব অনেক দিনই উধাও। চোখ তুলে তাকালেই কড়া মেজাজের সঙ্গিনধারী সেনা। কোথাও বা আধাসেনা আর কাশ্মীর পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা। টুকটাক জঙ্গিহানা যেটুকুও বা ঘটছে, রাত পোহাতে না-পোহাতেই মিলছে জঙ্গি নিকেষের খবর। আজাদ কাশ্মীরের নামে রাজনীতির পাঠশালায় তালা পড়ে গিয়েছে বহুকাল। একের পর এক জাতীয়স্তরের নেতাকে দিনের পর দিন গৃহবন্দি করে রেখেছে মোদী সরকার। ৩৭০ ধারার কবচ খুলে কাশ্মীরকে ভেঙে জম্মুকে আলাদা করে এখন শোনাচ্ছে কাশ্মীরের উন্নয়নের স্লোগান।
তাই এই বিজেপিকে রুখতে হবে। ‘কাশ্মীর ফাইলস’ নামে সিনেমা দেখিয়ে পণ্ডিত ফেরানোর স্লোগান কপচানো বিজেপিকে রোখাই উপত্যকার আঞ্চলিক দলগুলোর কাছে এখন মিশন কাশ্মীর। এজন্য চিরবৈরি জম্মু-কাশ্মীর পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র পাশে বসতে আর অ্যালার্জি নেই ন্যাশনাল কনফারেন্সের। বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি)-র প্রধান ওমর আবদুল্লা নিজেই জানালেন পিডিপির সঙ্গে জোট গঠনের কথা। পিডিপি নেত্রী মেহবুবাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি জোটে রাজি। জোটে থাকছে সিপিএম এবং আওয়ামি ন্যাশনাল কনফারেন্সও। ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডেকলারেশন’ (পিএজিডি) নামেই ঠিক হয়েছে জোট। যার নেতৃত্বে ওমরের বাবা প্রবীণ নেতা ফারুখ আবদুল্লা। এই প্রসঙ্গে অবশ্য ওমর বলেন, ‘আমি পিএজিডির কর্তা নই। আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত দিতে পারি। আমি বলব, তাদের যৌথভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত। যদি তারা আমার পরামর্শ চায়, আমি একসঙ্গে লড়াইয়ের কথাই বলব।’
আরও পড়ুন- বিধানসভা নয় বরং চোখে ভাসছে ২৪, দলীয় মঞ্চে স্পষ্ট করলেন কেসিআর
এর আগে জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপিকে রুখতে একসঙ্গে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন মেহবুবা। বর্তমানে তাঁর একটাই কথা, কে জিতে ক্ষমতায় এল, তা বড় নয়। বরং, কাশ্মীরে বিজেপিকে ঠেকানোটাই বড়। ইতিমধ্যে দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন মেহবুবা। তবে, সে নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে রা কাড়েননি। এর আগেও সনিয়া-মেহবুবা বৈঠক হয়েছিল। তবে সেটা ২০১৭-য় পিডিপি-বিজেপি জোট কাশ্মীরে ক্ষমতায় আসার আগে। তারপর এই ফের মেহবুবা-সনিয়া বৈঠক। তবে, পিএজিডিতে থাকছে না আফতাব বুখারির আপনি পার্টি এবং সাজাদ লোনের পিপলস কনফারেন্স। এই প্রসঙ্গে ওমর জানিয়েছেন, তাঁরা বিজেপির বি এবং সি টিমকে ভোট ভাগ করতে দেবেন না। ওমরের এই কথার কারণ, ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা উঠে যাওয়ার পর দিল্লির বিজেপি নেতারা আপনি পার্টিকে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ ন্যাশনাল কনফারেন্সের। আর, পিপলস কনফারেন্স অতীতে বিজেপির শরিক ছিল।
Read story in English