বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করলেন নেপালের মাওবাদী নেতা পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড। তাঁর সঙ্গে বৈঠকের মধ্যে দিয়েই শেষ হল প্রচণ্ডর তিন দিনের ভারত সফর। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে এই বৈঠক হয়েছে। ভারত-নেপাল দ্বিপাক্ষিক বিষয় সংক্রান্ত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও বিজেপির ফরেন সেলের প্রধান বিজয় চৈতিভালেও।
মাস তিনেক আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবাও বিজেপির সদর দফতরে ঘুরে গিয়েছেন। তিনিই হলেন নেপালের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি সরকারি সফরে এসে ভারতের শাসক দলের সদর দফতরেও ঘুরে গিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে সরব হন নেপালের বাম দলগুলো। জবাবে নেপালের বিদেশমন্ত্রী নারায়ণ খাদকা বলেন, 'নেপালি কংগ্রেসের প্রধান হিসেবে দেউবা বিজেপির সদর দফতরে গিয়েছিলেন। নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যাননি।'
আরও পড়ুন- দ্বিতীয় সন্দেহভাজনও মাঙ্কিপক্সেই আক্রান্ত, নিশ্চিত করলেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ
তবে, কাঠমান্ডুতে ফিরে যাওয়ার আগে দেউবা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের আয়োজিত বারাণসীর পুজোতেও অংশ নিয়েছিলেন। তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভারত সফরকালে সেই সময় দেউবা এবং এবার প্রচণ্ডর মধ্যে কেউই কিন্তু, অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করলেন না।
অথচ, ভারতের বিভিন্ন দল বিশেষ করে বাম দলগুলোর সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠতার কথা ভারতীয় বামেরা দাবি করে থাকেন। তবে, সেসব যেন ১৯৯৬ সালে নেপালে রাজতন্ত্র উচ্ছেদের চেষ্টার মধ্যে দিয়েছে এগিয়ে এখন স্তিমিত হয়ে পড়েছে। এবারের সফরে প্রচণ্ডর বাম দলগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া দেখে বিজেপির অনেকেই এমন টিপ্পনিও কেটেছেন।
অতীতে বারবার দেখা গিয়েছে, নেপালের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কংগ্রেস এবং বাম দলগুলো বরাবরই সঙ্ঘ পরিবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে। কারণ, সঙ্ঘ পরিবার নেপালের রাজতন্ত্রের সমর্থক ছিল। ২০০৬ সালে নেপাল রাজতন্ত্র থেকে ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রে পরিণত না-হওয়া পর্যন্ত সেই ধারাই অব্যাহত ছিল।
শুধু তাই নয়, বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার নেপালকে হিন্দু রাষ্ট্র এবং নেপালে রাজতন্ত্র বহাল রাখার পক্ষেও সওয়াল করেছিলেন। সেই অবস্থান যেন প্রচণ্ডর বিজেপির সদর দফতরে সফরের মধ্যে দিয়ে বদলে যাওয়ার আভাস দিল বলেই মনে করছেন নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব।
Read full story in English