বিরোধী পার্টি রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) ইফতারে যোগ দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বিহারের রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিযোগ, জোটসঙ্গী বিজেপির সঙ্গে নানা বিষয়ে নীতীশের বিবাদ আছে। তার অন্যতম ইফতার। সেই ইফতারের আয়োজক আবার প্রধান বিরোধী দল আরজেডি। যাদের সঙ্গে বিজেপির বরাবরই আদায়-কাঁচকলায়।
সংযুক্ত জনতা দলের শীর্ষনেতা নীতীশ সেই বিরোধী দলের ইফতারে যোগ দেওয়ায় স্বভাবতই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে বিহারের রাজনৈতিক মহলে। কারণ, অতীতে আরজেডির সঙ্গে জোট গড়ে বিহারের শাসনক্ষমতায় ছিলেন জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। তাই এবারও তেমন কোনও সম্ভাবনাই ইফতার পার্টির মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে কি না, তা জানতে উদগ্রীব ছিলেন অনেকেই। কিন্তু, তেমন কোনও সম্ভাবনার উড়িয়ে দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। বদলে তিনি জানিয়েছেন, আরজেডির ইফতারে যোগ দেওয়ার মধ্যে রাজনীতির কোনও যোগসূত্র নেই।
শুক্রবার তাঁকে আরজেডি নেত্রী রাবড়ি দেবীর বাসভবনে ইফতারে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতেই তিনি এসেছেন। এই ব্যাপারে নীতীশ কুমার বলেন, 'আমরা সকলেই এমন ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে থাকি। আমার এই উপস্থিতির সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগসূত্র নেই। আমাকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তাই যোগ দিয়েছি। আমরাও ইফতার পার্টি আয়োজন করি। আর, সেখানে সবাইকেই আমন্ত্রণ জানাই।' বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবীর বাড়ি পাটনার ১০, সার্কুলার রোডে। সেই দাওয়াত-ই-ইফতার অনুষ্ঠানে নীতীশ কুমার শুধু অংশগ্রহণই করেননি। কুর্সিতে তাঁর পাশে রাবড়ি দেবীর দুই ছেলে তেজপ্রতাপ ও তেজস্বী যাদবকে বসে থাকতেও দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- পরপর পরাজয়ে হতদ্যোম কর্মীরা, বাড়ছে কোন্দলও, ঠেকাতে টানা কর্মসূচি রাজ্য বিজেপির
শনিবার বীর কুঁয়ার সিংয়ের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। সেখানেই রাজপুত বীর কুঁয়ার সিংয়ের মূর্তিতে মালা দেওয়ার পর আরজেডির ইফতারে যোগ দেওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন নীতীশ। বিহারের রাজনীতিতে রাজপুতদের একটা বড় প্রভাব আছে। বীর কুঁয়ার সিং ছিলেন রাজপুত। ভোজপুর জেলার জগদীশপুরের রাজবাড়ির ছেলে। তিনি সিপাহি বিদ্রোহের সময় ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাঁর যখন ৮০ বছর বয়স, সেই সময় তিনি সমাজের বিভিন্নস্তরের মানুষদের নিয়ে সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন।
তিনি শেষ যুদ্ধ লড়েছিলেন ১৮৫৮ সালের ২৩ এপ্রিল। জগদীশপুরের কাছে ওই যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাহিনী সম্পূর্ণ পরাস্ত হয়েছিল। সেই দিনটি কুঁয়ার সিংয়ের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেই প্রসঙ্গে নীতীশ বলেন, 'বাবু বীর কুঁয়ার সিংয়ের বিজয়োত্সব দেশজুড়ে পালন করা উচিত। তিনি ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক নায়ক। তাঁর সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা আমাদের মনে রাখতে হবে। এই সম্প্রীতি এবং ভ্রাতৃত্ব আমাদের বজায় রাখতে হবে।'
Read story in English