১৮ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার আগে অসংসদীয় শব্দের তালিকা প্রকাশ করেছে লোকসভার সচিবালয়। যা নিয়ে উত্তাল রাজনীতি। সরব বিরোধী দলগুলি। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে স্বৈরতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ তুলেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার মুখ খুললেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। তাঁর যুক্তি, 'কোনও শব্দ নিষিদ্ধ হয়নি, বরং অপসারিত করা শব্দগুচ্ছের সংকলনপ্রকাশ করা হয়েছে।'
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, 'এর আগে অসংসদীয় শব্দের বই প্রকাশ করা হত। কাগজের ব্যবহার বন্ধ করতে তা এবার আমরা ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছি। যে সমস্ত শব্দগুলিকে বাতিল করা হয়েছে সেগুলির একটা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।'
এরপরেই বিরোধী পক্ষের উদ্দেশ্যে স্পিকারের প্রশ্ন, 'বিরোধীরা কী ১১০০ পাতার ডিকশেনরি পড়েছে? যদি পড়ে থাকত তাহলে এভাবে ভ্রান্ত ধারণা ছড়াত না। এটা ১৯৫৪ সাল থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর ১৯৮৬, ১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৪, ২০০৯, ২০১০ থেকে প্রতি বছর প্রকাশিত হয়।'
আরও পড়ুন- ‘লজ্জার, ব্রিটিশ শাসনেও মানুষ এত পরাধীন ছিল না’, অসংসদীয় শব্দ বিতর্কে তোপ অভিষেকের
বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করতে বেছে বেছে কোন শব্দ নিষিদ্ধ করা হয়নি। যে গুলো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোই তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান লোকসভার অধ্যক্ষ।
প্রসঙ্গত, নতুন অসাংবিধানিক শব্দের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে লোকসভাভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে। সেখানে নতুন বেশ কিছু শব্দ রাখা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে ‘লজ্জাজনক’, ‘নির্যাতন’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘নাটক’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘অযোগ্য’ ‘ভণ্ডামি’র মতো শব্দ। তাছাড়াও সংসদের অধিবেশনে ‘নৈরাজ্যবাদী’, ‘শকুনি’, ‘স্বৈরাচারী’, ‘খলিস্তানি’, ‘বিনাশ পুরুষ’, ‘জয়চাঁদ’ , ‘তানাশাহি’, ‘দাঙ্গা’, ‘দালাল’, ‘দাদাগিরি’, ‘খুন সে ক্ষেতি’, ‘দোহরা চরিত্র’, ‘জুমলাবাজি’, ‘কোভিড স্প্রেডার’, ‘স্নুপগেট’ প্রভৃতি শব্দের প্রয়োগও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হিন্দির তালিকায় রয়েছে ‘গদ্দার’, ‘গিরগিট’, ‘কালা দিন’, ‘কালা বাজারি’, ‘নিকম্মা’, ‘নৌটঙ্কি’, ‘ঢিণ্ডোরা পিটনা’, ‘বেহরি সরকার’ প্রভৃতি। সাংসদদের বলা হয়েছে এইসব শব্দ তাঁরা অধিবেশনের বিতর্কে প্রয়োগ করতে পারবেন না।
যা নিয়ে সোচ্চার বিরোধিরা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী টুইটে লিখেছেন, 'যেভাবে বিজেপি সরকার পরিচালিত হচ্ছে, তাতে এই শব্দগুলো প্রযোজ্য হওয়ার কথা। সেগুলোকেই এখন নিষিদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।' ক্যাপশনে লিখেছেন এটা ‘নতুন ভারতের ডিক্সেনরি।'
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন জানিয়েছেন, 'কদিনের মধ্যে সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। সাংসদদের উপরে হাস্যকর নির্দেশিকা জারি হয়েছে। আমরা এখন থেকে সংসদে নিজেদের বক্তব্যে পেশ করার সময় ‘মৌলিক’ শব্দগুলিই ব্যবহার করতে পারব না। যেমন, লজ্জাজনক. অপব্যবহার, বিশ্বাসঘাতকতা, দুর্নীতিগ্রস্ত, কপটতা, অযোগ্য। আমি এই শব্দগুলি ব্যবহার করব। সাসপেন্ড করুন। গণতন্ত্রের জন্য লড়ব।'