১৮ জুলাই শুরু সংসদের বাদল অধিবেশন। তার আগেই সাংসদদের মুখে লাগাম পরানোর বন্দোবস্ত করেছে মোদী সরকার। বুধবার সংসেদর তরফে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বেশ কিছু শব্দ তালিকার উল্লেখ রয়েছে। যাগুলিকে অসংসদীয় বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সেইসব শব্দ আর সাংসদরা অধিবেশন চলাকালীন প্রয়োগ করতে পারবেন না।
অসংসদীয় শব্দ বলে বিবেচিত হবে, 'জুমলাবাজি', 'বাল বুদ্ধি', 'আশেমড', 'অ্যানারকিস্ট', 'ডিক্টেটোরিয়াল', 'শকুনি', 'অ্যাবিউশড', 'বিনাশ পুরুষ', 'খুন কে খেতি', 'খালিস্থানি', সহ আরও অনেক। সরকারকে আক্রমণে মূলত বিরোদী শিবিরের সাংসদরাই এইসূ শব্দ প্রয়োগ করে থাকেন। আসন্ন বাদল অধিবেশনে এইসব শব্দ আর শোনা যাবে না। নিয়ম করে লাগাম পরাল কেন্দ্র।
মোদী সরকারের এই পদক্ষেপকে 'অনাকাঙ্ক্ষিত' বলে তোপ দেগেছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি টুইটে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। লিখেছেন, 'আপনি যদি আপনার সমালোচনায় সৃজনশীল হতে না পারেন তবে সংসদের কী লাভ? জুমলজীবীদের জুমলবাজ না বলে কী বলব? শব্দ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত অপ্রয়োজনীয়!'
সিঙ্ঘভির সংযোজন, 'এইসব শব্দগুলিকে অসংসদীয় বলে আসলে সরকারের উপর চাপ কমাতে চাইছে কেন্দ্র। কীভাবে ভন্ডামী, লজ্জিত, অপব্যবহার ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা যেতে পারে? শব্দের তীক্ষ্ণ ব্যবহার শিখতে হবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেকে।'
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের প্রশ্ন, কেন লোকসভা এবং রাজ্যসভার সংসদীয় শব্দ তালিকায় 'সাঙ্ঘী' শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। 'কীভাবে বিজেপি ভারতকে ধ্বংস করছে এবং তাদের নিষিদ্ধ করেছে' তা বর্ণনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছেন।
সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করে, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেছেন যে তিনি নিশ্চিত করবেন যে তিনি এই ধরনের 'মৌলিক' শর্তাবলী ব্যবহার করবেন। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য স্পিকারকে চ্যালেঞ্জও করেন তিনি।
ডেরেক টুইটে লিখেছেন, 'কয়েক দিনের মধ্যে অধিবেশন শুরু হবে। সাংসদের ওপর গ্যাগ অর্ডার জারি হয়েছে। এখন, সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আমাদের বেশ কয়েকটি শব্দগুলি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না, যা লজ্জার। শব্দগুলির মধ্যে রয়েছে অপব্যবহার করেছে। বিশ্বাসঘাতক, দুর্নীতিগ্রস্ত, কপটতা, অযোগ্য। কিন্তু আমি এই সব শব্দ ব্যবহার করবই। গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে আমাকে সাসপেন্ড করুন।'