Advertisment

আরও তিনবার হত্যার চেষ্টা হয়েছিল ওয়াইসিকে, প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য

বৃহস্পতিবার আসাদউদ্দিনের গাড়ির চাকা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল ধৃতরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Asaduddin owaisi

উত্তরপ্রদেশের মীরাটে মিম সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়েইসির উপর হামলা।

এআইএমআইএম সাংসদ আসাউদ্দিনের ওপর হামলার ঘটনায় নতুন তথ্য উঠে এল। বৃহস্পতিবার আসাদউদ্দিনের গাড়ির চাকা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল ধৃতরা। জেরায় অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে, এর আগে তিনবার তারা আসাদউদ্দিনের ওপর হামলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, ভিড় থাকায় শেষ পর্যন্ত তারা হামলার রাস্তা থেকে সরে আসে।

Advertisment

বৃহস্পতিবার হামলার সময় আসাদউদ্দিন মিরাট থেকে দিল্লি ফিরছিলেন। সেই সময় তাঁর গাড়ির চাকায় গুলি লাগে। ঘটনায় তদন্তে নেমে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম শচিন শর্মা ও শুভম। এফআইআরে জানানো হয়েছে, ধৃত ব্যক্তিদের জবাবে প্রথমে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তদন্তকারীরা। ধৃতরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করছিল না। এরপর পুলিশ তাদের জানায়, হামলার ঘটনা সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে। তারপরই ধৃতরা নিজেদের অপরাধ কবুল করে। আর, কীভাবে হামলা চালিয়েছিল, তা বিস্তারিত পুলিশকে জানায়।

ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শচিন পুলিশকে বলেছে, তাঁর বড় নেতা হওয়ার লক্ষ্য ছিল। সে নিজেকে প্রকৃত দেশভক্ত মনে করে। ওয়াইসির বক্তব্য শুনে শচিনের মনে হয়েছিল যে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর। আর, সেই কারণেই ওয়াইসির বিরুদ্ধে তার মনে শত্রুভাব তৈরি হয়েছিল। পুলিশকে শচিন জানিয়েছে, ওয়াইসির গতিবিধি জানতে সে এরপর মিমের নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে। মিমের দাসনার চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। তাঁর থেকেই জোগাড় করে ওয়াইসির গতিবিধির খবর।

শচিন পুলিশকে জানিয়েছে, সে প্রথমে ঠিক করেছিল যে প্রচার চলাকালীন ওয়াইসির ওপর হামলা চালাবে। সেই জন্যই সে শুভমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। সাহারানপুরের বাসিন্দা শুভমের সঙ্গে শচিনের দীর্ঘ কয়েক বছরের যোগাযোগ। সেই যোগাযোগ থেকেই শুভমকে নিজের দুষ্কর্মের অংশীদার করতে শচিনের বেশি সময় লাগেনি। এই প্রসঙ্গে শচিন পুলিশকে জানিয়েছে, তার কথায় শুভম সাহারানপুর থেকে গাজিয়াবাদে এসেছিল। ২৮ জানুয়ারি তাঁরা দু'জনে ওয়েভ সিটি এলাকায় দেখাও করে। শচিনের কথামতো শুভম গাজিয়াবাদে বন্ধুদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। রাজি হয়ে যায় ওয়াইসির ওপর হামলা চালানোর জন্য।

আরও পড়ুন হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওয়াইসির নিরাপত্তায় বড়সড় রদবদল কেন্দ্রের

গাজিয়াবাদের শহিদ নগরে ৩০ জানুয়ারি ওয়াইসির মিটিং ছিল। সেই মিটিংয়ে শুভমকে নিয়ে যোগও দিয়েছিল শচিন। সেই দিনই তারা ওয়াইসিকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু, সভায় ভালো ভিড় ছিল। তাই কিছু করতে পারেনি। এরপর দু'জনে বৃহস্পতিবার মিরাটের গোলা কুঁয়া এলাকায় যায়। কিন্তু, সেখানেও ব্যাপক ভিড় থাকায় ওয়াইসির ওপর হামলা চালাতে পারেনি শচিন ও শুভম। এরপর কিঠোর এলাকায় ছিল ওয়াইসির সভা। সেখানেও মিম নেতার পিছু নিয়েছিল ওই দুই আততায়ী। কিন্তু, সেখানেও আগের সভাগুলোর মতো ভিড় থাকায় তারা কিছুই করে উঠতে পারেনি।

এরপর তারা জানতে পারে যে, ওয়াইসি মিরাট থেকে এসইউভি গাড়িতে চেপে দিল্লিতে ফিরবেন। সেকথা মাথায় রেখে তারা ঠিক করে, পথেই মিম নেতাকে গুলি করে হত্যা করবে। কারণ, এরপর আর ওয়াইসিকে হত্যার সুযোগ পাবে কি না, তা জানা ছিল না শচিন আর শুভমের। সন্ধের সময় ওয়াইসির গাড়ি পৌঁছয় ছাজর্ষি টোল প্লাজায়। গাড়ির স্পিড টোল প্লাজায় কম ছিল। তাই দেখে সেখানেই হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় দুই আততায়ী। তারা ওয়াইসির গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানো শুরু করে।

আরও পড়ুন সমাজবাদী পার্টিকে প্রকাশ্যে আহ্বান ওয়াইসির

প্রায় বলিউডি সিনেমার কায়দায় হওয়া এই হামলার ঘটনার বিবরণও পুলিশকে দিয়েছে ধৃত দুই আততায়ী। শচিন পুলিশকে জানিয়েছে, প্রথম গুলি চালানোর সময় তাকে দেখে ফেলে ওয়াইসি। প্রাণে বাঁচতে গাড়ির নীচে বসে পড়েন মিম নেতা। এরপরই ওয়াইসিকে মারতে গাড়ির নীচের দিকে গুলি চালিয়েছিল অভিযুক্তরা। তারা ভেবেছিল, ওয়াইসি হয়তো মারা গেছেন। কিন্তু, গুলি ওয়াইসির গায়ে লাগার বদলে গাড়ির চাকায় লেগেছিল। গুলি চালানোর পরই সে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দিয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে শচিন। তাই, শুভম ঠিক কতগুলো গুলি চালিয়েছিল, তা সে জানে না-বলেই পুলিশকে জানিয়েছে মূল অভিযুক্ত শচিন শর্মা। হামলার পর শুভম অন্যত্র চম্পট দিয়েছিল বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

AIMIM Asaduddin Owaisi UP Elections 2022
Advertisment