উত্তরপ্রদেশে ভোটপর্বের গোড়া থেকেই গতবাধা পথ ধরে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিজেপির সুপারস্টার ক্যাম্পেনার নরেন্দ্র মোদী। বিধানসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফা চলাকালীন রবিবার চতুর্থ দফার প্রচারেও সেই গতবাধা পথ থেকে তিনি সরলেন না। বুঝিয়ে দিলেন, বহুজন সমাজ পার্টিও না। কংগ্রেসও না। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ সমাজবাদী পার্টিই।
সমীক্ষা, বিভিন্ন দলের প্রচারে যাই বলা হোক, অখিলেশ সিং যাদবের প্রচারে ভিড় উপচে পড়ছে। এটা ভোটপর্বের আগে থেকেই দেখে আসছে উত্তরপ্রদেশ। আর গোড়া থেকেই নরেন্দ্র মোদীর ভোটপ্রচারে শুনে আসছে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
অতীতে বাংলা থেকে ভিনরাজ্য। যখনই দফাভিত্তিক নির্বাচন হয়েছে, নরেন্দ্র মোদীকে দেখা গেছে আগের দফা চলাকালীন পরের দফার ভোটপ্রচার চালাতে। রবিবারও তিনি সেই রীতি বজায় রাখলেন। তেমনই তাঁর প্রচারের রীতি মেনেই আগের দুই দফার মতোই বক্তব্যের মূল বিষয়গুলোও বদলালেন না বিজেপির সুপারস্টার ক্যাম্পেনার।
আরও পড়ুন দলছুট গরু ফসল খেয়ে নিলেও সরকার হাত গুটিয়ে বসে, অভিযোগ কৃষকদের
মোদী বললেন, '২০১৭ পর্যন্ত পরিবারবাদীরা উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু, ডবল ইঞ্জিনের সরকার বাধামুক্ত হয়ে উন্নয়ন ঘটিয়েছে। কারণ, এই সরকার পরিবারবাদী নয়। আমি উত্তরপ্রদেশের সাংসদ। কিন্তু, ২০১৪ থেকে ২০০১৭, পরিবারবাদীরা আমাকে সমর্থন করেননি। আমি এজন্য দুঃখিত। কারণ, পরিবারবাদীদের বাধায় উত্তরপ্রদেশের সাংসদ হয়েও আমি উত্তরপ্রদেশের মানুষের জন্য কোনও কাজ করতে পারিনি ওই তিন বছর। আপনারা যদি ফের তাঁদের ফিরিয়ে আনেন, তাঁরা আমায় কাজ করতে দেবে? এমন লোকেদের কি ফের নির্বাচিত করা উচিত?'
মোদীর এই সব তির যে কার দিকে, হরদোইয়ের রবিবারের সভায় হাজির কারও তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। কারণ, যে সময়ের কথা বিজেপির সুপারস্টার ক্যাম্পেনার বলছেন, সেই সময় উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় ছিল সমাজবাদী পার্টি। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন অখিলেশ সিং যাদব।
আরও পড়ুন ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদারের
যারা কাট্টা বা পিস্তল ব্যবহার করত, সমাজবাদী পার্টির সরকার তাদের খোলাখুলি দাদাগিরি করার লাইসেন্স দিয়েছিল বলে আজও অভিযোগ করে থাকেন উত্তরপ্রদেশবাসী। তাঁদের ওই মনের কথা সভায় তুলে এনে মোদী বোঝানোর চেষ্টা করেন, উত্তরপ্রদেশবাসী সমাজবাদী জমানার গুন্ডারাজ থেকে মুক্তি পেতেই বিজেপিকে ক্ষমতায় এনেছিল। আর, সেই গুন্ডারাজ থেকে মুক্তিও পেয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মানুষ।
সভায় সাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া রেখে মোদী বলেন, 'তুষ্টিকরণের রাজনীতির জন্য যাঁরা হামেশাই আমাদের উত্সব বন্ধ করে দিত, এবারও তারা জনগণের ভোটে যোগ্য জবাব পাবে।' মোদীর দাবি, বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যর্থ হবে বুঝে ওই পরিবারবাদীরা এখন জাতপাতের নামে বিষ ছড়াচ্ছে। কুর্সির জন্য নিজেদের পরিবারের মধ্যেও লড়াই করছে। কিন্তু, ডবল ইঞ্জিন সরকার কোনও পরিবারের না। কেন্দ্রেও কোনও পরিবারের সরকার নেই। কেন্দ্র এবং উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ডবল ইঞ্জিনের সরকার তাই গরিবের সরকার। কৃষকের সরকার, যুবকদের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে চলা সরকার।
আরও পড়ুন ‘আহমেদাবাদ বিস্ফোরণে দোষীদের সঙ্গে যোগ সপা-র’, বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপির
মোদীর দাবি, হরদোইবাসী এবছর দু'বার হোলি খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা প্রথমবার হোলি খেলতে চান বিজেপির জয়ের পর। দ্বিতীয়বার ১০ মার্চ, হোলির দিন খেলবেন। সেই হোলি খেলার ব্যবস্থা করতে হরদোই তথা উত্তরপ্রদেশবাসীকে বুথে যেতে হবে। একথা বলে, রবিবার উত্তরপ্রদেশবাসীকে বিজেপির পক্ষে ভোট দিতে বুথে যাওয়ার আহ্বান জানান বিজেপির সুপারস্টার ক্যাম্পেনার।