পসমন্দা মুসলিমদের কাছে পৌঁছনোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। সমাজের পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের এই অংশকে কাছে টানতে চায় দল। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের রামপুর ও আজমগড় লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিজেপির প্রার্থীরা। এই দুই এলাকায় মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিশেষ করে পসমন্দা মুসলিমদের সংখ্যাই বেশি। সেই সব এলাকায় জয়ের জন্য স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, পসমন্দা মুসলিমদের সমর্থনের ফলে গত বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ভোটসংখ্যা প্রায় আট শতাংশ বেড়েছে।
সেকথা মাথায় রেখে হায়দরাবাদে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক শেষে কর্মিসভায় নতুন ডাক দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে মাথায় রেখে অহিন্দু দরিদ্র জনতাকে কাছে টানার জন্য বিজেপি কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন মোদী। তাঁর এই বক্তব্যের লক্ষ্য ছিল রামপুর এবং আজমগড়ের মত পসমন্দা মুসলিমরা। আর, তাতেই বিরোধীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ বেড়েছে। কারণ, এতদিন বিজেপিকে হিন্দুদের সংগঠন বলে বিরোধী দলগুলো দাগিয়ে দিত।
এতে মুসলিম-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘু ভোট বিরোধীদের ঝুলিতে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু, মোদী চান উন্নয়নের ওপর জোর দিতে। সেই কারণে, তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে তাঁর সঙ্গী হিসেবে চাইছেন। আর, তা করতে গিয়েই তিনি সব সম্প্রদায়ের বঞ্চিত, শোষিত এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিজেপি নেতা-কর্মীদের।
তালিকায় পসমন্দা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনও রয়েছে। যাঁদের সংখ্যা উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারেই বেশি। বিরোধী দলগুলো সাম্প্রদায়িক কারণে এতদিন এই পসমন্দা মুসলিমদের ভোট পেত। এবার বিজেপি সেই ভোটকে নিশানা করায়, তাদের ভোটের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমবে বলেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এই সব দলগুলোর। কারণ, ইতিমধ্যে দলিত ভোটের একাংশকে কবজা করে ফেলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তার ফল উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের বিভিন্ন নির্বাচনেও পড়েছে। অবিজেপি দলগুলো দলিতদের থেকে বিশেষ একটা সুবিধা পায়নি।
আরও পড়ুন- সংবিধানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বেলাগাম মন্তব্য কেরলের মন্ত্রীর, সম্প্রচার হতেই বাড়ছে বিতর্ক
এই ব্যাপারে সমাজবাদীর এক সংখ্যালঘু নেতা বলেন, 'গত বিধানসভা নির্বাচনে বরবাঁকি সমাজবাদী প্রার্থী আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে পসমন্দা মুসলিমরা তাঁকে ভোট দেবেন না। তিনি আমাকে বলেন এই ব্যাপারে পসমন্দা মুসলিমদের সঙ্গে কথা বলতে। সেই মতো আমি পসমন্দা মুসলিম সম্প্রদায়ের অধ্যুষিত একটা গ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানকার বাসিন্দাদের সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীক সমর্থনের জন্য বলি। কিন্তু, তারা জানিয়ে দেয় যে বিজেপি সরকারের জমানায় বাড়ি পেয়েছে, বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছে, টয়লেট পেয়েছে, এলপিজি কানেকশন পেয়েছে, কম পয়সায় চিকিৎসার সুবিধা পেয়েছে। বিজেপিকেই তাই ভোট দেবে। আমি তাঁদের অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি।'
Read full story in English