বলিউডের 'নায়ক' সিনেমার কায়দায় দুর্নীতি দমনে হেল্পলাইন নম্বর চালু করে দিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। বৃহস্পতিবারই দুপুরের দিকে ঘোষণা করেছিলেন বড় ঘোষণা করতে চলেছেন। এমন ঘোষণা, যা এতদিন দেশে কোথাও হয়নি। পরে, দেখা গেল হেল্পলাইন নম্বর চালু করলেন তিনি। দিন সাতেক হল, পঞ্জাবে ভোটের ফল বেরিয়েছে।
বছরের পর বছর প্রত্যাশা মুখ থুবড়ে পড়ায় পঞ্জাববাসী এবার মুখ বদল করেছেন। অকালি, কংগ্রেসকে ক্ষমতার গলি থেকে বের করে দিয়ে রাজ্যের নেতৃত্বের পতাকা তুলে দিয়েছেন আম আদমি পার্টিকে। সৃষ্টি হয়েছে ইতিহাস। ঘোষিত মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী প্রাক্তন কমেডিয়ান ভগবন্ত মান, সেই সুবাদেই আজ পঞ্চনদের রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে।
দলের সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো চমক দেওয়ার ব্যাপারে তিনি যে কিছু কম যান না, গোড়া থেকেই তা বোঝাতে শুরু করেছেন মান। শপথের আগে বলেছিলেন, তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে পঞ্জাবের সব বাসিন্দাই আমন্ত্রিত। কারণ, এটা সব পঞ্জাবির শপথের দিন। যদিও প্রকৃত আমন্ত্রিতের সংখ্যা ছিল যথারীতি সীমিত। এবার সাত দিন কাটতে না-কাটতেই চালু করলেন দুর্নীতি দমনে হেল্পলাইন নম্বর।
বলিউডের 'নায়ক' সিনেমায় এভাবে হেল্পলাইন নম্বর চালু করে দুর্নীতি দমনে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করা অনিল কাপুরকে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গেও এমন হেল্পলাইন নম্বর চালু হয়েছিল। তবে, সেটা তৃণমূলের তরফে চালু করা হয়েছিল, 'দিদি কে বলো'। যদিও সেই নম্বরে দুর্নীতির অভিযোগ শোনার চেয়েও সমস্যার দ্রুত সমাধানে জোর দেওয়া হয়েছিল।
মান অবশ্য বলিউডের সিনেমা না। তাঁর হেল্পলাইন নম্বর চালুর মডেল হিসেবে দলনেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দিল্লি সরকারকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আপ দিল্লিতে ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় মানুষের কাছে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণের ভিডিও চেয়েছিল। বহু ভিডিও জমাও পড়েছিল। তার জেরে দিল্লিতে সম্পূর্ণ দুর্নীতি দমন সম্ভব হয়েছে।
অবশ্য একথাও সত্যি যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের লড়াই দীর্ঘদিনের। আমলা থাকাকালীন তিনি দুর্নীতি রোধে বড় ভূমিকাও নিয়েছিলেন। অন্না হাজারের মঞ্চে তিনি যোগ দেওয়ার সময়ও কেজরিওয়াল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন। আর, দিল্লিতে তাঁর নেতৃত্বে আপের ক্ষমতায় আসার পিছনে মূল এজেন্ডাই ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই।
মানের দাবি, তিনি যে নম্বর দিয়েছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। সেখানেই দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে পারবেন পঞ্জাবের সাধারণ মানুষ। তিনি নিজে দুর্নীতিমুক্ত পঞ্জাব সরকার চালাতে চান। এজন্য তাঁর মোবাইলে ছবি, ভিডিও পাঠিয়ে বা লিখিতভাবে দুর্নীতির অভিযোগ হোয়াটসঅ্যাপ মারফত জানানো যাবে।
Read story in English