দল ছেড়েছেন ক্যাপটেন অমরিন্দর সিং। নতুন দল গড়েই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। ভোটের মুখে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিন বিধায়ক। এছাড়া দলে গোষ্ঠীকোন্দল তো রয়েছেই। এই অবস্থায় আসন্ন নির্বাচনকে মাথায় রেখে দলের 'যুবরাজ' রাহুল গান্ধীকে দিয়ে দলীয় প্রচার শুরু করিয়েই চমক দিতে চেয়েছিল পাঞ্জাবের কংগ্রেস নেতৃত্ব। ঘোষণা হয়েছিল আগামী ৩রা জানুয়ারি মোগায় হবে সভা, তৈরি হয়েছিল মঞ্চ। প্রস্তুতি অনেকটাই এগিয়েছিলো। কিন্তু, সেসব এখন শুধুই গল্প। হঠাৎই জানা গিয়েছে দেশে না থাকায় সভায় থাকবেন না রাহুল। ফলে কোমর বেঁধে বিধানসভা ভোটের প্রচারে নামার আগেই জোর ধাক্কা হাত শিবিরে। অসন্তুষ্ট শতাব্দী প্রাচীন দলের প্রদেশ নেতৃত্বের একাংশ।
সূত্রের খবর, গত বুধবারই দলের ১৩৭তম বর্ষপূর্তী উদযাপনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর দেশ ছেড়েছেন ওয়ানাড়ের সাংসদ। জানা দিয়েছে গতবারের মতো এবারও তিনি নাকি ইতালিতে রয়েছেন তাঁর মামার বাড়িতে। তবে, রাহুলের গন্তব্য নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি কংগ্রেস।
রাহুলের বিদেশ সফর নিয়ে কটাক্ষ করে থাকে বিজেপি। বাদ যাননি তৃণমূল নেত্রীরও। কিন্তু মোগায় 'যুবরাজে'র জনসভা স্থগিতের পরপরই বিতর্ক তৈরি হতে পারে। যা আঁচ করেই কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেছেন, 'ব্যক্তিগত কারণে বিদেশ সফরে রয়েছেন। বিজেপি এবং তার মিডিয়া বন্ধুরা যেন অকারণে গুজব না ছড়ায়।' সূত্রের খবর, গত নভেম্বরেওপ্রায় তিন সপ্তাহ বিদেশে কাটিয়েছেন রাহল। দলীয়স্তরে গুঞ্জন, আগামী ১৫ বা ১৬ জানুয়ারি জনসভা করতে পারেন সনিয়া-তনয়।
ভোটের মুখে রাহুল গান্ধীর এই বিদেশ সফর নিয়ে পাঞ্জাবে কংগ্রেসের নেতৃত্বের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। পাঞ্জাবে কংগ্রেস হাজারো সমস্যায় জর্জরিত। ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন না করতে পারলে সংগঠন ও সর্বভারতীয়স্তরের দলের ভাবমূর্তিতে ব্যাপক ছাপ পড়বে। এইঅবস্থায় বিজেশে যাওয়ায় 'যুবরাজে'র দলের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রদেশ কংগ্রেস নেতার কথায়, মোগা সমাবেশ থেকে দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা তুলে ধরার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটাই ধাক্কা খেল। আরেক নেতার দাবি, 'রাহুল গান্ধীর বিদেশ যাত্রা নিয়ে আমরা কিছুই জানি না। বিরোধীদের কটাক্ষ ও সুরজেওয়ালার সাফাইয়ের পর আমরা পুরোটা জেনেছি।'
প্রদেশ নেতৃত্বের একাংশের কথায়, 'আমরা ভেবেছিলাম যে, রাহুল মুখ্যমন্ত্রী চান্নি, প্রদেশ সভাপতি সিধু ও অন্য গোষ্ঠীর নেতাদের একসঙ্গে মঞ্চে তুলে ধরে গোষ্ঠীকোন্দল মেটানোয় বড় ভূমিকা নেবেন। কিন্তু এখন সমাবেশটাই স্তগিত করে দিতে হল। টিকিট দেওয়া সংক্রান্ত বিষয়টিও অনেকটাই পিছিয়ে গেল।'
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদ চেয়ে চাপ বাড়াচ্ছেন প্রদেশ সবাপতি নভজ্যোত সিং সিধু। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী না ঘোষণা করা হলে তিনি দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখছে হাইকমান্ড। অন্যদিকে, সিধুকে মুখ্যমন্ত্রী করার ঘোর বিরোধী চান্নির মন্ত্রী রানা গুরজিৎ সিং। তাঁর কথায়, 'ও আমায় টিকিট না দিয়ে দেখুক, আমি নির্দ প্রার্থী হয়ে জিতে দেখাব। আমি অবাক কারণ, দলের জয়ের থেকেও এখন কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে ভাবছে দেখে।'
এক প্রদেশ কংগ্রেস নেতার প্রশ্ন, 'আশা করি হাই কমান্ড সিঝুকে নিয়ন্ত্রণ করবেন। আগে আমরা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছুটি কাটানো নিয়ে কটাক্ষ করেছি, কিন্তু এখন রাহুল গান্ধী কী করছেন?'
Read in English