এতদিন সংঘ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যাবতীয় অভিযোগ শোনা গিয়েছে বিজেপির থেকে। কিন্তু, বিজেপির পরামর্শদাতা সংগঠন আরএসএস তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি। সংঘ পরিবারে থেকেও যেন মধ্যপন্থা অবলম্বন করাই শ্রেয় মনে করেছেন আরএসএস নেতৃত্ব। নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন স্রেফ সামাজিক কাজকর্মের মধ্যে।
যা দেখে আমজনতার বারবার মনে হয়েছে, আরএসএস নেতৃত্বের একাংশ আর বিজেপির নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গী এক নয়। উভয়ের ভাবনার মধ্যে যথেষ্ট ফারাক আছে। কিন্তু, এবার সেই ভ্রান্তি ঘুচল। এবার অবস্থান বদলাল বিজেপির পরামর্শদাতা সংগঠন। প্রকাশ্যে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলার সমালোচনায় মুখর হলেন আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্ব।
শনিবারই গুজরাতে আরএসএসের প্রতিনিধি সভার বৈঠকে দলের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ হয়েছে। এই প্রতিনিধিসভাই হল আরএসএসের সিদ্ধান্ত গ্রহণের শীর্ষ বৈঠক। সেখানে রীতিমতো রিপোর্ট পেশ করে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। যে ভাষায় এতদিন বারবার সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী থেকে দিলীপ ঘোষের মতো রাজ্য বিজেপির নেতারা। যে ভাষায় সরব হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
এবার কার্যত সেই ভাষাতেই সংঘের রিপোর্টে সমালোচনা করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলার। সমালোচনা করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসার। আরএসএসের বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, '২০২১ সালের মে মাসে বাংলায় যা হয়েছে, তা রাজনৈতিক শত্রুতা আর ধর্মীয় উন্মাদনার ফল।' এই ধর্মীয় উন্মাদনার জন্য এক নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকেই চিহ্নিত করেছেন সংঘের শীর্ষ নেতারা।
আরও পড়ুন- এক্কেবারে উলটো সুর! সংবিধানের নামে ধর্মীয় উন্মাদনা বাড়ছে, দাবি আরএসএসের
প্রতিবছরই আগামী একবছরের কর্মসূচি এই প্রতিনিধি সভার বৈঠক থেকেই ঠিক করে নেন আরএসএসের শীর্য নেতৃত্ব। এই বৈঠকে গত একবছরে সংঘের কাজকর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আর, তার ভিত্তিতেই ঠিক করা হয়, সংঘ আগামী দিনে ঠিক কীভাবে চলবে। বৈঠকে সংঘের শীর্ষস্তরের সব নেতারাই উপস্থিত ছিলেন।
ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সব প্রাদেশিক এবং আঞ্চলিক শীর্ষনেতারাও। পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে আরএসএসের রিপোর্টে করা সমালোচনার প্রভাব বাংলার রাজনীতিতে পড়বে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বিজেপি নেতাদের পরামর্শ দেবেন আরএসএস নেতৃত্ব।
Read story in English