Advertisment

আর আমাকে আম্মা বলে ডাকবে না, বলেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন 'গর্বিত' মা

মঙ্গলবার সকালে প্রথমে স্ত্রী সন্তোষী এবং পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়িতে মৃত্যুসংবাদ জানানো হয়। তারপরই এলাকা ভেঙে পরে সন্তোষবাবুর বাড়িতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তিন মাস আগেই হায়দরাবাদে পোস্টিংয়ের অর্ডার পেয়েছিলেন। তবে দেশ জোড়া লকডাউন এবং সীমান্তে উত্তেজনার কারণে ফিরতে পারছিলেন না। সপ্তাহ দুয়েক আগে লকডাউন শিথিল করায় বাড়ি আসার তোড়জোড়ও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে সে ফেরা আর হলো না কর্নেল বিক্কুমাল্লা সন্তোষ বাবুর।

Advertisment

সোমবারই পূর্ব লাদাখে ভারত ও চীন দুই পক্ষর সেনারা যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। তার মধ্যে ছিলেন সন্তোষ বাবুও। মঙ্গলবার সকালেই তেলেঙ্গানার সূর্যপেট এলাকায় নিহত কর্নেলের মায়ের কাছে খবর পৌঁছে যায়, পুত্র শহীদ হয়েছেন! কর্ণেলের পিতা বি উপেন্দ্রর জানান, "ওর স্ত্রী সন্তোষী এবং পুত্ররা দিল্লি থেকে হায়দরাবাদে আসার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিল। সবাই কাছাকাছি থাকবো, সেটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছিল। জানতাম, সীমান্ত অশান্ত রয়েছে। তবে কখনই ভাবিনি এমনটা হবে।"

১৬ বিহার ব্যাটলিয়নের কম্যাডিং অফিসার সন্তোষ বাবু লাদাখে কর্তব্যরত ছিলেন শেষ দেড় বছর। মা বি মল্লিকা জানালেন, বাচ্চা থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাইত ও। "স্কুলে পড়ার সময়েই ও নিজের ভবিষ্যৎ ঠিক করে ফেলেছিল। " জানান, তাঁর মা। বিশাখাপত্তনাম জেলার ১৯৯৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সৈনিক স্কুলে পড়াশুনা করেন তিনি।

মঙ্গলবার সকালে প্রথমে স্ত্রী সন্তোষী এবং পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়িতে মৃত্যুসংবাদ জানানো হয়। তারপরই এলাকা ভেঙে পরে সন্তোষবাবুর বাড়িতে।

পিটিআইকে সূর্যপেট জেলার পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্তোষের মৃতদেহ বুধবার বাড়িতে আনা হবে। মৃত্যুতেও পুত্রের জন্য গর্বিত তার পিতা। বলছিলেন, "দেশের সুরক্ষার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করল ও।সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, দেশের জন্য নিজেকে আত্মসর্গ করেছে। তবে আমরা এতটাই কষ্ট পেয়েছি যে এই ট্র্যাজেডি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

কান্নায় ভেঙে পড়ে মা মল্লিকা জানাচ্ছিলেন, "আমার পুত্র দেশের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছে। এতে আমি দারুণ গর্বিত। তবে মা হিসাবে বুক ফেটে যাচ্ছে। অন্যের জন্য নিজের জীবন বিপদে ফেলতে ও একবারও ভাবে না। বাচ্চা বেলা থেকেই ও এরকম। এখনো ভাবতে পারছি না যে ও আর নেই। আর ওর গলায় আম্মা ডাক শুনতে পাব না।"

সন্তোষবাবুর সঙ্গেই হাতাহাতি যুদ্ধে নিহত হন হাবিলদার পালানি। তামিলনাড়ুর রামনাথপুরম জেলায় কদুকালার জেলার বসিন্দা তিনি। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে রেখে গেলেন তিনি। তাঁর ভাইও সেনাবাহিনীর সদস্য। তিনিই প্রথমে দাদার মৃত্যুসংবাদ বয়ে আনেন।

পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, লাদাখে পোস্টিং হওয়ার আগে পালানি এলাহাবাদ এবং রাজস্থানে পোস্টিং ছিলেন। কিছুদিন আগেই পরিবারের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। সেই সময় তিনি জানান, কিছুদিন ফোনে যোগাযোগ রাখতে পারবেন না।

মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামী এবং বিরোধী নেতা স্ট্যালিন সহ সমস্ত রাজনৈতিক দল এই মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। পরিবারের জন্য ২০ লক্ষ টাকা এবং একজনের সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে তামিলনাড়ু সরকার।

Indian army china
Advertisment