শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথগ্রহণ। তার আগে বৃহস্পতিবারই সেই লক্ষ্যে এক পা ফেললেন যোগী আদিত্যনাথ। তাঁকে সর্বসম্মতভাবে নেতা নির্বাচিত করল উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দল। রাত পোহালেই শুক্রবার। আর, টানা দ্বিতীয়বার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা। এমন নজির নেই উত্তর ভারতের এই রাজ্যে। সেই হিসেবে রেকর্ড করবেন গোরক্ষনাথ ধামের মহন্ত।
গোরক্ষপুরের দীর্ঘসময়ের সাংসদ থাকাকালীন তাঁর যুববাহিনী আওয়াজ তুলত, ' গোরক্ষপুর মে রহে না হ্যায়, তো যোগী যোগী কহে না হ্যায়।' গতবার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন যেভাবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এনকাউন্টারের রোজনামচা খুলে বসেছিল, সেই আওয়াজ এখন উত্তরপ্রদেশের সব জায়গা থেকেই যেন উঠছে। সেটা ভয়, ভীতি, শ্রদ্ধাই হোক বা অন্যকিছুর কারণে।
ভোটের ফলই বলে দিচ্ছে যাদবদের পহেলওয়ানি অস্তমিত। এখন উত্তরপ্রদেশ মানে শুধুই যোগীর রাজ। লখনওয়ের লোকভবনে বৃহস্পতিবার যা হল, শুধুই যেন হতে হয় বলে হওয়া। সব ঠিকই ছিল আগেভাগে। বিজেপির প্রবীণ নেতা তথা বিধায়ক সুরেশকুমার খান্না প্রস্তাব করেছিলেন যোগীর নাম। সেই প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে দেরি করেননি বিজেপির নবনির্বাচিত বিধায়করা।
আরও পড়ুন- সংক্রমণ কমতেই উঠছে কোভিডবিধি, এপ্রিল থেকে কীভাবে বদলাবে আপনার জীবন?
বাংলায় বিপর্যয়ের পর পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বেশ চাপে থাকা, বিজেপিকে উত্তরপ্রদেশ যে এভাবে পদ্মফুলে ভরিয়ে দেবে, তা অতিবড় বিজেপি ভক্তও আন্দাজ করতে পারেননি। বিশেষ করে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের জনসভায় যখন জনতার ঢল নামছিল, তখন যেন ক্রমশই কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছিল বিজেপি নেতাদের। কিন্তু, সব ভালো যার শেষ ভালো। সেই ভালোটা দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশবাসী। ভরসা রেখেছেন কানফাট্টা যোগীদের প্রধান মহন্তের ওপর। তাঁকে সামনে রেখেই যে এবারের ভোট ময়দানে নেমেছিল গেরুয়া শিবির। বৃহস্পতিবারের লোকভবন তাই ছিল যোগীময়। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তিনিই যোগীকে গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন।
আদিত্যনাথ আবার সর্বভারতীয় রাজনীতি এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের বাধ্যবাধকতাকে মাথায় রেখে মোদী মন্ত্র, 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ'-এর মন্ত্র আওড়ালেন। দাবি করলেন, এই মন্ত্রের দৌলতেই বিরোধীদের প্রচার ব্যর্থ হয়েছে। সঙ্গে যুক্ত করলেন, এখন উত্তরপ্রদেশে উত্সব পালন করা নিয়ে কোনও অশান্তি হয় না। যা হয়, সবটাই শান্তিপূর্ণ ভাবে। যেন মোদী ম্যাজিকের মোহিত। অথবা মোদীই তাঁর মার্গদর্শক- সেকথা স্পষ্ট করে বোঝানোর চেষ্টা।
Read story in English