Advertisment

সংগঠনের বেহাল দশা, সোচ্চার 'বিক্ষুব্ধ'রা, সনিয়ার মুখে শুধুই ঐক্যবদ্ধ কংগ্রেসের ডাক

আগামিতে শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির সামনে আরও কঠীন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বলেও কংগ্রেস নেতৃত্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sonia Gandhi said about united congress

দলীয় সংগঠন নিয়ে চিন্তায় কংগ্রেস সভানেত্রী।

বছরের শুরুতেই পাঁচ রাজ্যের ভোটে ধরাশায়ী কংগ্রেস। দলের মধ্যে ফের নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠছে। সরব হাত শিবিরের 'বিদ্রোহী' গোষ্ঠী। রোগ নির্ণয়ে হয়েছে বিস্তর কাটাছেঁড়া। তারপরও সভানেত্রী হয়েই রয়ে গিয়েছেন সনিয়া গান্ধী। এই প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলকে 'হতাশার এবং বেদনাদায়ক' বলে জানিয়েছেন সনিয়া। আগামিতে শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির সামনে আরও কঠীন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বলেও কংগ্রেস নেতৃত্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। সনিয়া গান্ধীর কথায়, 'দলের ভবিষ্যত আরও চ্যালেঞ্জের। এই সময়কালেই কংগ্রেস নেতা, কর্মীদের নিষ্ঠা, সংকল্প এবং চেতনার পরীক্ষা হবে।'

Advertisment

তবে, এ দিনের বৈঠকে কংগ্রেসের 'বিক্ষুব্ধ' জি-২৩ নেতাদের দাবি বা বিভিন্ন রাজ্য ইউনিটের গণ্ডগোলের কোনও কথার উল্লেখ করেননি সনিয়া। উল্টে, দলীয় ঐক্য নিশ্চিতকরণে সকলকে বদ্ধপরিকর হতে নির্দেশ দিয়েছেন সভানেত্রী।

সনিয়া গান্ধীর কথায়, 'সাম্প্রতি হয়ে যাওয়া পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলে আপনারা কতটা হতাশ তা আমি খুব ভালো করেই জানি। হতশা ও বেদনায় নিমজ্জিত আমরা। আমাদের কর্মক্ষমতা পর্যালোচনা করার জন্য কংগ্রেস কর্মসমিতির বৈঠক হয়েছে। আমি অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও দেখা করেছি। আমাদের সংগঠনকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায় সে বিষয়ে আমি অনেক পরামর্শ পেয়েছি। অনেকগুলি প্রাসঙ্গিক এবং আমি সেগুলি বাসত্বায়িত করতে হবে।'

সভানেত্রী বলেছেন যে, 'একটি চিন্তন শিবিরের আয়োজনও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ সেখানেই বৃহত্তর সংখ্যক সহকর্মী এবং দলীয় প্রতিনিধিদের মতামত শোনা যাবে।' তিনি বলেন, 'আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি সেগুলির মোকাবিলা কীভাবে সর্বোত্তমভাবে করা যায়, সে বিষয়ে ও জরুরি পদক্ষেপের বিষয়ে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।'

সনিয়ার সংযোজন, 'আগামির রাস্তা আগের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। এটা আমাদের কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও ধৈর্যের পরীক্ষা। কংগ্রেসের বিশাল সংগঠনের সকল স্তরে একতা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। তা নিশ্চিত করার জন্য যা যা করণীয় আমরা তা পালনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।'

গণতন্ত্র ধ্বংস করছে বিজেপি, অভিযোগ কংগ্রেসের। বিজেপিকে নিশানা করে দলীয় বৈঠকে একই দাবি করেছেন সনিয়া গান্ধী। বলেছেন, 'কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন শুধুমাত্র কেয়ক জন মানুষ বা একটি দলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, আসলে তা ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য এবং আমাদের সমাজের জন্য অপরিহার্য।'

কংগ্রেস সভানেত্রী বিজেপি সরকারের 'বিভাজনকারী এবং মেরুকরণে'র রাজনীতিকে আক্রমণ করেছেন। বলেছেন যে, 'শাসক দল এবং তার নেতাদের বিভাজন এবং মেরুকরণের এজেন্ডা এখন বিভিন্ন রাজ্যে রাজনৈতিক আলোচনার একটি নিয়মিত বৈশিষ্ট্য। দলীয় স্বার্থে ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে এবং অনেক সময় আবার মিথ্যা তথ্য দিয়ে তা তৈরি হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সকলের রুখে দাঁড়ানো উচিত ও এঘৃণ্য এই অপরাধের শক্তির মোকাবিলা করা প্রয়োজন। কংগ্রেস দেশের প্রাচীন মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনকে নষ্ট হতে দেবে না।'

ইডি, সিবিআই এখন কেন্দ্রের ভয় দেখানোর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের এই নিয়ে এক রা। যা তুলে ধরে সনিয়া বলেছেন, 'রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাধারীরা ভয় এবং ভীতি ছড়াচ্ছে। এই ধরণের নির্লজ্জ হুমকি এবং কৌশল আমাদের নত করতে পারবে না। আমরা ভয়ে পেয়ে চুপ করে থাকবো না।'

কৃষকদের প্রতি কেন্দ্রের মনোভাব, মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানী, রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়েও এ দিন সরব হতে দেখা যায় সনিয়া গান্ধীকে। কংগ্রেস সভানেত্রীর কথায়, 'ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট শিল্পগুলির অবস্থা অনিশ্চিত। কৃষকদের দেওয়া কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি আদৌ পূরণ হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। রান্নার গ্যাস, তেল, পেট্রোল, ডিজেল, সার এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অসহনীয় হারে বেড়েছে এবং ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।' বিজেপিকে নিশানা করে তাঁর দাবি, 'কেউ গড়ার কাজ করে দেশেরভিত্তি মজবুত করে, কিন্তু অন্যরা স্রেফ তার কৃতিত্ব দাবি করে।' সনিয়ার কথায়, 'আমি আনন্দিত যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের অন্তত কিছু যুগান্তকারী উদ্যোগ (১০০ দিনের কাজ) গত দুই বছরে আমাদের কোটি কোটি মানুষের ত্রাতা হয়ে উঠেছে। যা তার আগে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা সমালোচিত হয়েছে।'

ইউক্রেন ফেরত হাজার হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যত, চিনা আগ্রাসন নিয়েও সরকারের বিরুদ্ধে এ দিন মুখ খুলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী।

Read in English

CONGRESS sonia gandhi
Advertisment