অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন অর্ণব গোস্বামী (Arnab Goswami)। বুধবার অন্তর্বর্তী জামিনে রিপাবলিক টিভির এডিটর-ইন-চিফকে জেল থেকে ছাড়ার নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। মামলায় অভিযুক্ত আরও ২ ব্যক্তিকেও ৫০ হাজার টাকার বন্ডের বিনিময়ে জামিন দেওয়া হল।
উল্লেখ্য, এদিন অর্ণব গোস্বামীর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মামলার শুনানিতে বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে প্রথমেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারকে। কোন যুক্তিতে রিপাবলিক টিভির এডিটর-ইন-চিফের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা রুজু করা হয়েছে? তা নিয়েই মূলত প্রশ্ন তোলা হয় এদিন। ব্যাক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেও হাইকোর্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মতে, "এই মামলায় হস্তক্ষেপ না করার অর্থ- আমরা ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছি।"
সুপ্রিম কোর্টের বিতারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘কেউ যদি কোনও চ্যানেল দেখতে পছন্দ না করেন, তাহলে দেখবেন না। আমরা আজ যদি এই মামলায় হস্তক্ষেপ না করি, তাহলে আমরা ধ্বংসের পথে হাঁটব। যদি আমরা উপর ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমি চ্যানেলটি দেখব না। মতাদর্শের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু সাংবিধানিক আদালতে সেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। নাহলে আমরা ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছি।’
এই মামলায় মহারাষ্ট্র সরকারের আইনজীবী কপিল সিবালকে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিচারপতি চন্দ্রচূড় জিজ্ঞাসা করেন যে, ‘আমরা ধরে নিচ্ছি যে এফআইআরে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ধ্রুব সত্য। তারপরও এটায় কি ৩০৬ ধারার মামলা করা যায়? এরকম বিষয়ে যেখানে কিছুটা অর্থ মেটানো হয়নি। তার ফলে আত্মহত্যা করেছেন। তার মানে কি প্ররোচনা দেওয়া? সেজন্য যদি কাউকে জামিন না দেওয়া হয়, তাহলে সেটা কি বিচারের নামে প্রহসন নয়?’
এর আগে অর্ণব গোস্বামীর আইনজীবী হরিশ সালভে আদালতে বলেছেন, উচিত শিক্ষা দিতেই তাঁর মক্কেলকে হেফাজতে রাখতে চাইছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। দু’বছরের পুরনো মামলার পুনঃতদন্তের যে নির্দেশ মহারাষ্ট্র সরকারকে দেওয়া হয়েছিল তার অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সালভে।
সোমবার অর্ণব গোস্বামীর অন্তবর্তী জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট। আত্মহত্য়ায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন রিপাবলিক টিভির এডিটর-ইন-চিফ অর্ণব গোস্বামী। ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে এক ইন্টিরিয়র ডিজাইনারকে আত্মহত্য়ায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বুধবার সাতসকালে অর্ণবের বাড়িতে হানা দেয় মুম্বই পুলিশ। তারপর তাঁকে তুলে নিয়ে যান খাঁকি উর্দিধারীরা। এরপরই গ্রেফতার করা হয় অর্ণবকে। তবে দিন কয়েক বাদে অবশেষে অর্ণবের ইচ্ছেপূরণ। তাঁকে জামিনে ছাড়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।