উপরাষ্ট্রপতি ভোটে শাসক শিবির, নাকি বিরোধীদের প্রার্থীকে ভোট দেবে তৃণমূল? এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে নানা জল্পনা চড়ছিল। শেষ পর্যন্ত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল বাংলার শাসক দল। বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূল নেত্রীর উপস্থিতিতে দলের সব সাংসদরা বৈঠক করেছেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এবারের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস।
অর্থাৎ বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা এনডিএ-য়ের প্রার্থী জগদীপ ধনকড় বা বিরোধীদের প্রার্থী মার্গারেট আলভা- কাউকেই ভোট দেবে না তৃণমূল।
রাষ্ট্রপতি ভোটে বিরোধীদের প্রার্তীকেই ভোট দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ, বিধায়করা। তাহলে উপরাষ্ট্রপতি ভোটে কেন পৃথক সিদ্ধান্ত? সাংবাদিক বৈঠকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমরা রাজ্যপাল থাকালীন জগদীপ ধনকড়ের ভূমিকা ও দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছি। এনডিএর প্রার্থী ধনকড়কে কোনও মতেই সমর্থন করা যায় না। অন্যদিকে তৃণমূল বিরোধীদের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকেও সমর্থন করবে না। উপরাষ্ট্রপতি ভোটে তৃণমূল ভোটদানে বিরত থাকবে। এ দিন উপস্থিত দলের ৮৫ শতাংশ সাংসদ মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তৃণমূল সাংসদরা মনে করছেন, যেভাবে প্রার্তী নির্বাচন হয়েছে তা ঠিক নয়। আরও সুষ্ঠুভাবে আলোচনার জায়গা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। ফলে আমরা এই ভোটদানে বিরত থাকছি।'
অভিষেকের অভিযোগ, তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী নির্বাচন করেছে বিরোধী বাকি দলগুলি। যদিও, মার্গারেট আলভার নাম ঘোষণার পরই এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার দাবি করেছিলেন যে, বৈঠকের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তা সম্ভব হয়নি। ২১শের সভায় তৃণমূল নেত্রীর দাবি, 'আগামী লোকসভায় বিজেপি একক সংখ্য়াগরিষ্ঠ দল হবে না। ওরা কম আসন পেলে বিরোধী দলগুলো এমনিতেই এক হয়ে যাবে।'
২০২৪ সালে বিরোধী জোট গড়ে বিজেপি সরকারকে পরাজিত করার কথা বারে বারেই বলেন মমতা। কিন্তু, তাঁরই দলের পদক্ষেপে কী বিরোদী জোটের ফাটলের ছবি স্পষ্ট হল? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, 'আমরা এনডিএ প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছি না। ভোটদানে বিরত থাকছি। তাতে বিরোধী ঐক্যে ফাটল এমনটা নয়।'
অঙ্কের হিসাবে এনডিএ প্রার্থী উপরাষ্ট্রপতিই উপরাষ্ট্রপতি ভোট এগিয়ে। কিন্তু, তৃণমূল ভোট না দেওয়ায় বিরোধী প্রার্থীর ভোটের হার কমবে। ফলে জগদীপ ধনকড়ের ভোটের ব্যবধান বাড়বে। সুবিধা হবে বিজেপির।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'কংগ্রেসকে আজ দিদি মোদীর দালালি করছেন। কংগ্রেসকে কালিমালীপ্ত করার চেষ্টা করছেন।'