ভাষার আবেগে বিজেপিতে ক্রমশই চওড়া হচ্ছে বিভাজন। আগেই দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো জানিয়েছিল, তারা হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া মেনে নেবে না। এবার একই সুর তামিলনাড়ুতেও। সেখানকার বিজেপি নেতারাও দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখের ওপর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন হিন্দি চাপানো তাঁরাও মানবেন না।
হিন্দির বিরুদ্ধে দক্ষিণ ভারত বরাবরই সরব। সংস্কৃতকে গ্রহণ করতে রাজি হলেও হিন্দিকে গ্রহণ করা কার্যত উত্তর ভারতের কাছেই মাথা নোয়ানো। এমনটাই ধারণা দক্ষিণ ভারতের। দক্ষিণের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। সেখানে উত্তরের ছোঁয়া দক্ষিণের মানুষ লাগতে দেননি। এক্ষেত্রে ভাষাগত ভাবে ইংরেজি দক্ষিণ ভারতের অনেক কাছের। শুধু ভারতের বিভিন্ন প্রান্তই না, ইংরেজি ব্যবহার করে বিদেশিদের সঙ্গেও সহজে যোগাযোগ করা যায়। উপনিবেশ পরবর্তী ভারতে ইংরেজির প্রতি বিদ্বেষ, দক্ষিণ ভারত কোনওকালেই সমর্থন করেনি। বরং, দক্ষিণের বিদ্বেষ গোবলয়ের হিন্দির প্রতি। এনিয়ে অতীতে কম রক্ত ঝরেনি।
কিন্তু, সমস্যা হল বিজেপি দলগত ভাবে হিন্দি ভারতজুড়ে প্রয়োগের ক্ষেত্রে। সরকারি ভাষা প্রয়োগের ব্যাপারে সাম্প্রতিক বৈঠকে তা আরও স্পষ্ট ধরা পড়েছে। এই বৈঠকের নেতৃত্ব দেন বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় নেতা অমিত শাহ। তিনিই জাতীয় শিক্ষানীতি নির্ধারক কমিটির প্রধান। সেই অবস্থান থেকে শাহ গোটা দেশে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার কথা জানিয়েছেন। আর, তাতেই আপত্তি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর। আপত্তি তামিলনাড়ুর। দলের রাজ্য দফতরে বসেই সেকথা বুধবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন তামিলনাড়ুর বিজেপি নেতা কে আন্নামালাই।
তিনি জানান, গোটা তামিলনাড়ু রাজ্য বিজেপিই হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে। শিক্ষা বা কাজের জন্য হিন্দি চাইলে শেখা যেতে পারে। কিন্তু, এটা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। তামিলনাড়ু বিজেপির কোনও নেতাই হিন্দিতে কথা বলেন না। নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করতে হিন্দি শিখতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা তামিলনাড়ুবাসীর নেই। আন্নামালাইয়ের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ভাষানীতি সমর্থন করেননি। গোটা বিষয়টি কংগ্রেসের ঘাড়ে চাপিয়ে আন্নামালাইয়ের অভিযোগ, গত ৪০ বছর ধরে হিন্দি চাপানো নিয়ে রাজনীতি করেছে গান্ধী পরিবার। আর, সেটা বুঝেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার মতো ভাষানীতি সমর্থন করেননি।
Read story in English