বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ওপর হামলা চালানোয় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হল। ঘটনাটি ঘটেছে বখতিয়ারপুরে। সেখানেই নীতীশ কুমারের পৈতৃক বাড়ি। তার কয়েকশো গজ দূরেই স্বাধীনতা সংগ্রামী শীলভদ্র যাজির বাড়ি। সেখানেই ফুলের মালা অর্পণ করছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। আচমকা পিছন থেকে অনেকটা নিরাপত্তা রক্ষীদের মতোই পোশাক পরা এক ব্যক্তি ছুটে আসেন। তিনি নীতীশের কাঁধ ধরে সরিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে পিছনে ছুটে আসেন 'সিএম সিকিউরিটি'র বিশেষ রক্ষীরা। তাঁরা ওই যুবককে ধরে দূরে সরিয়ে নিয়ে যান। আটক করা হয় ওই যুবককে। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের নাম শংকর ওরফে ছোটু ভার্মা।
অন্যদিনের মতোই রবিবারও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের টানা কর্মসূচি ছিল। তিনি বিহারের বাঢ় এলাকা পরিদর্শন করেন। যদিও আসন পুনর্বিন্যাসের পর বাঢ় লোকসভা কেন্দ্র আর নেই। পাশাপাশি, নালন্দা অঞ্চলও পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাঁচ বার এই কেন্দ্রের জনপ্রতিনিধিত্ব করেছেন নীতীশ কুমার। বখতিয়ারপুরের অধীনে ডজনখানেক গ্রাম তিনি রবিবার পরিদর্শন করেন। তার মধ্যে তাঁর পৈতৃক বাড়ির কাছের ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়ে যায়। বিভিন্ন মহলের দাবি, পারিবারিক বা গ্রাম্য বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। যদিও সেসব স্বীকার করেনি বিহার পুলিশ। পাটনার সিনিয়র পুলিশ সুপার এমএস ধিলোঁর দাবি, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের হয়নি। করোনা পরিস্থিতির আগে ওই যুবক এক অর্কেস্ট্রা গ্রুপে শিল্পী হিসেবে কাজ করত। পরে এক গয়নার দোকানে কাজ নেয়।
বিহার প্রশাসন সূত্রে খবর, নীতীশ কুমার নিজেও তাঁর আধিকারিকদের বলেছেন, যাতে ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না-নেওয়া হয়। তিনি উলটে ওই যুবকের আবেদন শোনার জন্য তাঁর আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনাকে বিরোধীদের একাংশ আবার সাজানো বলেও অভিযোগ করছেন। কারণ, 'সিএম সিকিউরিটি' বা মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যাওয়া সহজ বিষয় নয়। নীতীশ কুমার নিজেকে জনদরদী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে চান। বর্তমানে বিহারে বিধান পরিষদের নির্বাচন চলছে। ৪ এপ্রিল ২৪ আসনে নির্বাচন হবে। ৭ এপ্রিল ফল ঘোষণা। এসবের ঠিক আগে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে নীতীশই লোক দিয়ে রবিবারের কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন বলেই মনে করছে আরজেডির মতো বিহারের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
Read story in English