মহারাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির শীর্ষ নেতা শরদ পাওয়ার। তিনি এমন এক ব্যক্তি, যিনি বন্ধুকে কাছে রাখতে জানেন। আবার শত্রুকেও কাছে রাখতে পারেন। আর, সেটা ফের তিনি প্রমাণ করলেন। শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে পাওয়ার মোদী সরকারের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র নিয়ে মুখ খুলেছেন। সঙ্গে, সংসদে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে বিরোধীদের এককাট্টা হয়ে আক্রমণের সম্পর্কেও নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে আদানি ইস্যু হল সেই বিরল ইস্যুগুলোর একটি, যাকে সামনে রেখে সংসদে বিরোধীরা এককাট্টা হয়েছেন।
এর আগে বিরোধীরা সেভাবে একজোট হতে পারছিলেন না। কারণ, তাঁদের মাথায় এমন কোনও ব্যক্তি ছিলেন না, যাঁর কথার প্রভাব গোটা বিরোধী মহলে পড়বে। সেই হিসেবে বারবার পাওয়ারের নাম উঠে এসেছে। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শনিবার মুখ খুলেছিলেন পাওয়ার। তিনি বলেছিলেন, দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আশ্চর্যজনক কিছু নয়। তবে তা কখনও বিরোধী ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।
তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবন সম্পর্কে যাঁরা জানেন, তাঁরা দেখেছেন যে কীভাবে পাওয়ার বারেবারে তাঁর প্রতি প্রত্যাশা পূরণ করেছেন। তিনি বরাবরই শিল্পের পক্ষে। আদানির সম্পর্কে সাক্ষাৎকারেও যা ধরা পড়েছে। আদানির ব্যাপারে পাওয়ারের এই দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্য নতুন কিছু নয়। তাঁর আত্মজীবনী 'লোক মাজে সঙ্গতি'তে পাওয়ার গুজরাটের এই শিল্পপতিকে পরিশ্রমী তরুণ ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে আদানি গ্রুপের প্রধানকে বন্ধু হিসেবে গণ্য করেছেন।
আরও পড়ুন- ‘লোভী হওয়া ঠিক নয়’, এনসিপি সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা শরদ পাওয়ারের
মহা বিকাশ আঘাড়ি (এমভিএ) জোট সরকারের জমানায়, পাওয়ার কংগ্রেস এবং শিবসেনার মধ্যে অসামান্য সমন্বয় ঘটিয়ে নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। সেই সময়ও আদানির সঙ্গে পাওয়ার সম্পর্ক আরও স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। আদানি এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শরদ পাওয়ারের বাড়ি বারামতিতে আমন্ত্রিত ছিলেন। পাওয়ারের নাতনি নিজে সেই সময় আদানিকে বাড়ি ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন। পাওয়ার নিজেও আহমেদাবাদে আদানির নানা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকেছেন। এতকিছুর পরও অবশ্য বিরোধী রাজনীতিতে অন্যতম সেরা নাম হয়ে থাকতে তাঁর কোনও অসুবিধা হয়নি।