এনসিপিকে নিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের জল্পনায় জল ঢাললেন শরদ পাওয়ার। সরকার গঠনে এনসিপির কোনও ভূমিকা থাকবে না। জানিয়ে দিলেন পাওয়ার। তাঁর কথায়, 'এনসিপি ও কংগ্রেসের হাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যা নেই। তাই বিরোধী আসনেই আমাদের বিধায়করা বসবেন।' গত কয়েকদিন ধরেই জল্পনা তৈরি হয় বিজেপিকে সরিয়ে শিবসেনা ও এনসিপি সরকার গঠন করবে। সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে পাওয়ারের বৈঠকের ভিত্তিতে সেই জল্পনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চাপের খেলা থেকে সরে এল পাওয়ারের এনসিপি।
শরদ পাওয়ার বলেন, 'রাজ্যবাসী আমাদের বিরোধী আসনে বসার দায়িত্ব দিয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকায় আমরা সেখানেই বসে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবো। সরকার গঠনে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই।' তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন আগামী কয়েকদিন তিনি মুম্বাইতে থাকবেন না। সাতারা, পুনে, কাতারায় যাবেন দলীয় কাজে। এনসিপির তরফে জানানো হয়েছে রাজ্যসভার নানান কাজ নিয়ে রাউত ও পাওয়ারের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল।
আরও পড়ুন: শিবসেনা থেকেই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী, দৌড়ে নেই পাওয়ার: সঞ্জয় রাউত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জোটসঙ্গী কংগ্রেস সরাসরি শিবসেনাকে সমর্থন দিতে নারাজ। অন্যদিকে, বিজেপির বিরোধীতা করেই সাফল্য পেয়েছে এনসিপি। এই অবস্থায় সরাসরি গেরুয়া দলের জোটসঙ্গীকে সমর্থন করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। অন্যদিকে, জোটে গেলেও শিবসেনার হুঙ্কারে সরকার কতটা দীর্ঘস্থায়ী হত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই ক্ষমতার দখলের জন্য শিবসেনার হাতের পুতুল হওয়া থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া এনসিপি প্রধান।
মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন নিয়ে সোমবার দুটি বৈঠক হয় দিল্লিতে। সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পরই পাওয়ারের মুখে এক-রা। প্রয়োজনীয় আসন না থাকায় তারা সরকার গড়তে পারবেন না। তাই মঙ্গলবারই শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলে দেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে নেই শরদ পাওয়ার।’
সুযোগ বুঝে আসরে বিজেপি। দেবেন্দ্র ফড়নবীশ দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দেন, 'সেনা ও বিজেপিকে রাজ্যবাসী সরকার গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। সেটাই বাস্তবায়িত হবে। ওদের কাছ থেকে সরকার গঠন নিয়ে এখনও কোনও প্রস্তাব আসেনি। প্রয়োজনে সমাধানের পথ খুঁজতে আমরাই আলোচনার প্রস্তাব দেব।' বিজেপির দরজা ২৪ ঘন্টা খোলা রয়েছে বলেও সেনা শিবিরকে ইঙ্গিত দেন তিনি।
আরও পড়ুন: মুকুল-অর্জুনকে বড় ধাক্কা মমতার? তৃণমূল ভবনে ভাটপাড়ার ১২ কাউন্সিলর!
এনসিপি কৌশলে সরকার গঠন প্রক্রিয়া থেকে সরে গিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রশ্ন নেই। মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবের জবাবে শিবসেনা মুখপাত্র ও রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, 'নতুন করে আলোচনার কোনও প্রয়োজন নেই। ভোটের আগে ৫০-৫০ ফর্মুলায় মুখ্যমন্ত্রীত্ব ভাগাভাগির যে কথা হয়েছিল তা বাস্তবায়িত হলেই কোনও অসুবিধা নেই।' আগের সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। সমাধান না মিললে কী মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে? উত্তরে রাউত বলেন 'জানি না।'
নির্বাচনে ২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ১০৫টি আসন। শিবসেনা ৫৬টি। এনসিপি এবং কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৫৪টি ও ৪৪টি আসন। বিজেপিকে সরিয়ে যাদের নিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের কথা ভেবেছিল সেনা শিবির তা এখন অনেকটাই ম্লান। কাদের কিনারা থেকে অক্সিজেন পেয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতেও দমতে নারাজ সেনারা। উল্টে, চাপ বজায় রেখেই নিজেদের দাবি পূরণ করতে চায় উদ্ধব ঠাকরের দল।
Read the full story in English