মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ২৩ নভেম্বর, ২০১৯-এর ভোরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের হাই ভোল্টেজ নাটকের পিছনে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের মাথা ছিল। মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নভিসের শারদ পাওয়ারের উপর ডাবল গেম খেলার অভিযোগের জবাবে, এনসিপি সুপ্রিমো এই সত্যকে মেনে নিয়েছেন। শারদ পাওয়ার বৃহস্পতিবার বলেন, ২০১৯ সালে ক্ষমতার লড়াইয়ের সময়, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ উইকেটটি তিনি গুগলিতে তুলে নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন শরদ পাওয়ার।
মহারাষ্ট্রে ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নাটক অব্যাহত। এই পরিপ্রেক্ষিপ্তে মহারাষ্ট্রের ডেপুটি সিএম দেবেন্দ্র ফড়নবিশ শরদ পাওয়ারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। পাওয়ার যদিও এটিকে স্রেফ ‘রাজনৈতিক গুগলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
২০১৯ সালে, মহারাষ্ট্রে বিজেপি এবং এনসিপির একটি জোট সরকার গঠিত হয়েছিল, দেবেন্দ্র ফড়নবিস মুখ্যমন্ত্রী এবং অজিত পাওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে সেই সরকার ভেঙে যায়। এই গোটা ঘটনায় ফড়নবিশ ও শরদ পাওয়ারের মধ্যে নতুন করে বাকবিতণ্ডার সঙ্গে সঙ্গে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পাওয়ার বিষয়টিকে তার ‘রাজনৈতিক গুগলি’ বললেও দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এটিকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে উল্লেখ করেছেন।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উপমুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, শরদ পাওয়ার অজিত পাওয়ারের সঙ্গে ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রে গঠিত সরকারকে অনুমোদন দিয়েছিলেন। প্রথমে দুই দলের মধ্যে আলোচনা করে জোট গঠন করা হয়। শরদ পাওয়ার সরকার গঠনে রাজি হয়েছিলেন কিন্তু তিন-চার দিন পরে তিনি সরে দাঁড়ান। শরদ পাওয়ারের সঙ্গে আলোচনার পর সরকার গঠনের চেষ্টা শুরু হয়। পাওয়ারের বিরুদ্ধে ডবল গেমের অভিযোগ আনেন ফড়নবিশ।
সাক্ষাত্কারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শরদ পাওয়ার এটিকে স্রেফ রাজনৈতিক গুগলি বলে মন্তব্য করেন। পাওয়ার বলেন, ‘আমি গুগলি ছুঁড়ে ২০১৯ সালে সরকার গঠনের জন্য বিজেপির সঙ্গে আলোচনা করেছি। দেবেন্দ্র ফড়নবিশ আমাকে উইকেট দেখিয়েছিলেন। বোলারকে কেউ উইকেট দেখালে ব্যাটসম্যান কী করে ছাড় পাবে? গুগলি বলে আমরা তার উইকেট নিয়েছি। এটা একটা রাজনৈতিক গুগলি ছিল’।
শরদ পাওয়ারের বক্তব্যের পর ফের মিডিয়ার সামনে বক্তব্য রাখেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। তিনি বলেন, “আমি খুশি যে শারদ পাওয়ার সত্যিটা স্বীকার করেছেন। কিন্তু এটা অর্ধসত্য। আমি আরও গুগলি ছুঁড়ে পুরো সত্য সামনে আনব”।