তৃণমূল কংগ্রেস নতুন কর্মসূচি নিয়েছে 'সোজা বাংলায় বলছি'। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন এই কর্মসূচির দায়িত্বে। এদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় 'সোজা বাংলায় বলছি' বলে গুরুতর অভিযোগ আনলেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে রাজ্য বিরোধিতা করছে বলে তোপ দেগেছেন বাবুল।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, "আমি সোজা বাংলায় বলছি, আমাদের পশ্চিমঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, ওনার সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেস যে আইডিওলজিতে সরকার চলাচ্ছে তার ভিত্তিতে পরিস্কার জাতীয় শিক্ষা নীতি কী সেটা সম্পর্কে জানেন না। সেটা নিয়ে পড়াশুনাও হয়নি। জাতীয় শিক্ষানীতির ঘোরতর বিরোধিতা করা হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটি যাচাই করে দেখবে কেন জাতীয় শিক্ষানীতি ঠিক নয়।"
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ওমপ্রকাশ মিশ্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই চিন্তা-ভাবনাকে একেবারেই অমূলক বলে মন্তব্য করেছেন। ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, "সাংবিধানিক ব্যবস্থার পরিকাঠামোর প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখেই রাজ্য সরকার শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়েছে। যাঁরা নতুন প্রস্তাবিত শিক্ষানীতি সম্পর্কে অধ্যায়ন করে রিপোর্ট দেবেন। এছাড়া এটা ভুল ভাবনা যে শিক্ষা নীতির বিরোধিতা করা হবে বা সমর্থন করা হবে। শিক্ষানীতির বিষয়টা না পড়াশুনা করেই বাবুল সুপ্রিয় সেটা সমর্থন করছেন। কিন্তু উল্টোদিকে সেটা না বুঝে বিরোধিতা করা হবে এটা একেবারেই ঠিক নয়।"
জাতীয় শিক্ষানীতি পর্যালোচনা করতে শিক্ষাবিদদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। তাঁরা পর্যালোচনা করে রাজ্যকে রিপোর্ট দেবেন। বাবুল বলছেন, "জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করার কারণ খুঁজে বের করবে কমিটি। কী কী ভুল আছে দেখবে। এটা কি মজা হচ্ছে?" বাবুলের বক্তব্যের কোনও গুরুত্ব দিতেই চাইছে না তৃণমূল। "রাজ্য সরকার কোথাও বলেনি আমরা নতুন শিক্ষানীতির বিরোধিতা করব।" বলছেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। প্রবীণ তৃণমূল নেতা বলেন, "যে কোনও সংস্কারের ভাল দিক গ্রহণীয় যা দেশের মানুষের প্রয়োজনের পরিপন্থী হবে তা বর্জনীয়। সেই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে আমরা নতুন শিক্ষানীতির খসরার মূল্যায়নের কাজ আমরা করছি। মূল্য়ায়নের পরই নয় মন্তব্য় করতে পারতেন বাবুল।"
আসানসোলের সাংসদের অভিমত, "বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরি করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ভাল সাজেশন থাকলে জানাতেই পারেন।" বাবুলের দাবি, "কমিটির সদস্যরা কী লিখবেন, কী রিপোর্ট দেবেন তা আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাবুলের এই দাবির তীব্র বিরোধিতা করেছেন অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র। তাঁর মতে, "যে কমিটি করা হয়েছে তাতে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা খুব বিশিষ্ট মানুষ। তাঁদের সম্পর্কে এমন ধারনা পোষণ করার অর্থ তাঁদের অসম্মানিত করা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে এমন মন্তব্য একেবারে অপ্রয়োজনীয়।"