২১ জুলাই ১৯৯৩, যুব কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানে গুলি চালিয়েছিল বামফ্রণ্ট সরকার। মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। সেই দিনটি শহিদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার বিজেপির শহিদ স্মরণও ২১ জুলাইতেই। হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে এবার তৃণমূলের যুবরাজ দিল্লি জয়ের ডাক দিয়েছেন। বিজেপিও এরাজ্যে আন্দোলন সংগঠিত করতে ২১ জুলাইকেই বেছে নিল। গেরুয়া শিবিরের লক্ষ্য এরাজ্যে লোকসভার আসনের সঙ্গে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনও।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের স্লোগান ছিল ৪২-এ-৪২। যদিও কম সময়ের প্রস্তুতিতে সেই লড়াইতে নেমেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার দলীয় সেনাপতি বদলে পরামর্শদাতাকে সঙ্গে নিয়ে তিন বছর আগেই প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল। ২১ জুলাইকে ভর করেই দিল্লি অভিযান শুরু করছে ঘাসফুল শিবির। দিল্লি, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, ত্রিপুরাসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে শহিদ দিবস ভার্চুয়ালি সম্প্রচারিত হবে বড় স্ক্রিণের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন- TMC-র পাল্টা এবার BJP, ২১ জুলাই ‘শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ গেরুয়া শিবিরের
প্রথমত ২১জুলাই কর্মসূচির মাধ্যমে দেশব্যাপী রাজনৈতিক হাইপ তুলতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারপরেই দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে আঞ্চলিক স্তরের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও সেরে ফেলেছে তৃণমূল। সেই সব রাজ্যে তাঁদের মাথা করেই ময়দানে নামতে চলেছে ঘাসফুল শিবির। ২০১৯-এর মতো তড়িঘড়ি স্লোগানে ভর না করে এবার অনেকটা ভেবে-চিন্তে তৃণমূল লক্ষ্য রাখছে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের দিকে। অনেকটাই সময় রয়েছে।
আরও পড়ুন- শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, মারাত্মক অভিযোগ
তৃণমূল কংগ্রেস যখন ক্ষমতা বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসকে হাতিয়ার করতে চাইছে ঠিক তখনই তেড়েফুঁড়ে উঠেছে বঙ্গ বিজেপি। হঠাতই পদ্মশিবিরও ২১ জুলাই রাজ্যব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছে। ইস্যু একই, শহিদ স্মরণ। বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির দাবি, ২মে থেকে গতকাল পর্যন্ত ৩৮ জন দলীয় কর্মী খুন হয়েছে এই রাজ্যে। হাজার হাজার দলীয় কর্মী এখনও ঘরছাড়া। নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় দলীয় নেতৃত্বকে পাশে না পেয়ে নীচুতলার কর্মীরা নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভপ্রকাশও করেছেন। তখনও রাজ্যজুড়ে গেরুয়া শিবিরের জোরদার আন্দোলন চোখে পড়েনি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ও ভূয়ো ভ্যাকসিনের পর সংগঠিত কর্মসূচি নিতে শুরু করে বিজেপি। এবার ২১ জুলাই। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এখানে আন্দোলন সংগঠিত করে বিজেপি এরাজ্যেই ব্যস্ত রাখতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। যখন দিল্লির দিকে নজর তৃণমূলের তখন বিজেপি ফের ২১ জুলাই থেকেই রাজ্যব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে। এখন থেকেই বিজেপি নেতৃত্ব বলতে শুরু করেছে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবে দল। তাহলে কি ২১ জুলাই থেকেই সেই অভিযান শুরু করল পদ্মশিবির? তাছাড়া এরাজ্যে বিজেপির ১৮ জন সাংসদ রয়েছেন। সেই আসন ধরে রাখাও তাঁদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। এবার অনেকটা সময় হাতে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই শক্তি খেলতে নেমেছে রাজনৈতিক ময়দানে। যদিও তৃণমূলের 'খেলা হবে' স্লোগানের তীব্র বিরোধী বিজেপি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন